বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত রাজধানী, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৬ এএম

বায়ুদূষণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ছবি : সংগৃহীত
অপ্রতিরোধ্য ভাবে বেড়ে চলছে রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা। চরম অস্বাস্থ্যকর বায়ুর মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়েই জীবন কাটাচ্ছেন মেগাসিটিতে বসবাসকারীরা। মাঝে মধ্যে ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু এবারের জানুয়ারিতে পরিস্থিতি আরো খারাপ পর্যায়ে নেমে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের বৈশ্বিক সূচকে বিশ্বের ১২৫টি শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিল ঢাকা। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) তালিকায় অবস্থানের পরিবর্তন না হলেও বেড়েছে দূষণ। সকাল ৯টায় ঢাকার বায়ুমান ছিল ২১৩। মানসূচকে ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
শুক্রবার সকালে ৩১৪ বায়ুমান নিয়ে দূষণের তালিকার শীর্ষে রয়েছে মিসরের কায়রো। এই তালিকায় এর পরে রয়েছে ভারতের দিল্লি, কলকাতা ও উগান্ডার কাম্পালা।
বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে বায়ুদূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
আরো পড়ুন : কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে পঞ্চগড়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায় বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।