×

আবহাওয়া

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে সবশেষ যা যা জানা গেলো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে সবশেষ যা যা জানা গেলো

ছবি: সংগৃহীত

   

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যরাত নাগাদ আঘাত হানতে পারে এটি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, দানা’র গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার এবং এটি ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। তিনি বলছিলেন, টেরিটোরিয়াল ইফেক্টের কারণে বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বেশ ঝড়ো হাওয়া বইবে। সেই সাথে বৃষ্টি তো থাকবেই। ভারতের আবহাওয়া বিভাগও ওই দুই অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। 

এদিন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এটি সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। বলা হচ্ছে, সকাল ছয়টায় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া অফিসও সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে। সেখানে তারা জানিয়েছে, দিবাগত মধ্যরাত থেকে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত দানা উপকূল অতিক্রম করবে।

দানার গতিপথ হবে পুরী ও সাগর দ্বীপ বরাবর। এই পথ হয়ে দানা ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে যাবে। তার গতিবেগ সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার হতে পারে। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং সাগরের সকল মাছ ধরার নৌকাকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

দানা যেহেতু বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে, তাই সেখানে এটি মোকাবিলা করার জন্য জোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী বলেন, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনাতে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলার জন্য দুই নম্বর সতর্ক সংকেত। সেই সাথে বরিশালের সব জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত থাকার কথাও তিনি জানান। জানা গেছে, বরিশালে ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। ভোলায় ৮৬৯টি, পিরোজপুরে ৫৬১টি, ঝালকাঠিতে ৮৮৫টি এবং পটুয়াখালীতে ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। তবে মহাবিপদ সংকেত না দেয়া পর্যন্ত বরিশালের কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায় না।

এর বাইরে, ঘূর্ণিঝড় 'দানা' মোকাবিলায় খুলনা জেলায় ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দানা'র প্রভাবে বাংলাদেশে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে, জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, যে খুব বেশি হবে না, তবে কিছু প্রভাব পড়বে। দানার প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া এই দুই বিভাগের প্রত্যেক জেলায় স্বেচ্ছাসেবক, নগদ অর্থ, চাল, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গো খাদ্য প্রস্তুত রয়েছে। সেইসাথে, মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘দানা’। আর এ নামকরণ করেছে কাতার। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এটি আরবি শব্দ। অর্থ, বড় মুক্তার দানা। বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করে একটি প্যানেল। এ অঞ্চলে যে ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়, ২০০২ সাল থেকে এ প্যানেলের সদস্য দেশগুলো সেগুলোর নামকরণ করে থাকে। প্রতি চার বছর পর পর সদস্য দেশগুলো বৈঠক করে আগে থেকেই পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে।

তিনি বলেন, ইকোনোমিক এন্ড স্যোশাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্যা প্যাসিফিক প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত সদস্য দেশগুলো এই অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের আগাম নামকরণ করে থাকে। এই নামকরণই দেশের নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী যেখানে ঘূর্ণিঝড় হয় সেখানে সে নামেই এটি পরিচিত হয়। এই তালিকায় রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ইরান, কাতার, ইয়েমেন, ওমান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় প্রবণতার দুটি মৌসুম রয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। এ মৌসুম দুটির একটি ‘প্রি মুনসুন’ এর আওতায় মার্চ, এপ্রিল, মে এই তিন মাস অন্তর্ভুক্ত। আরেকটি ‘পোস্ট মুনসুন’ অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর এ তিন মাস এই মৌসুমের অন্তর্ভুক্ত। আবহাওয়াবিদ মল্লিক জানান, অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় প্রবণ মাস। ১৮৯১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অক্টোবরে শুধু ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে ৫১টি। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে ৪৩টি। মোট ৯৪টি ঘূর্ণিঝড় এ সময়ে তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। গত বছর ২১ থেকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ হয়েছে। এটা চট্টগ্রামে উপকূলের দক্ষিণ দিয়ে অতিক্রম করেছে। এর আগের বছর চিত্রা ঘূর্ণিঝড় এ মাসেই তৈরি হয়েছিল। এই ঘূর্ণিঝড় দানাও সেই প্রবণতারই অংশ বলে জানান আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App