সকাল থেকেই মানুষের ভীড় বাড়তে থাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে। হাতে পতাকা আর ফুল নিয়ে হাজারো জনতার অপেক্ষা প্রিয় নেতাকে একনজর দেখার ও বরণ করে নেয়ার। অবশেষে দুপুর ২টায় শেষ হয় সেই অপেক্ষার প্রহর। দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর জেল থেকে ছাড়া পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। পা রাখেন খোলা আকাশে, মুক্ত বাতাসে।

১৬ জানুয়ারি দুপুরে তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারামুক্ত হন। যেন মুহূতেই পাল্টে যায় কেন্দ্রীয় কারাগারের চিত্র। প্রিয় নেতাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে ব্যস্ত হাজারো কর্মী। যে যেভাবে পারছেন গলায় পড়িয়ে দিচ্ছেন ফুলের মালা।চোখে চশমা, মাথায় সাদা টুপি ও পাঞ্জাবী পড়ে হাসিমুখে কর্মীদের শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে সদ্য কারামুক্ত বাবরকে। মেলাচ্ছেন হাত।

দীর্ঘদিন পর নেতাকে কাছে পেয়ে উজ্জীবীত কর্মীরা। এরপর কর্মীদের সাথে নিয়ে সরাসরি চলে যান জিয়াউর রহমানের মাজারে। সেখান থেকে রাজধানী গুলশানের বাসায় ফিরবেন তিনি।

এর আগে ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান বাবর। এ রায়ের মাধ্যমে বিগত সরকারের আমলে বাবরের বিরুদ্ধে করা সব মামলা থেকে খালাস পান তিনি। বাবরের পরিবার জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর পর আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর। এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। সবশেষ ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে লুৎফুজ্জামান বাবর খালাস পান। এর মধ্য দিয়েই তার মুক্তির পথ সুগম হয়।