ইলিয়াস আলীকে হত্যার পর মৃতদেহ কোথায় নেওয়া হয়?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী দল ও মত দমনে গুম ও খুনের মতো মানবতা বিরোধী অপরাধ করো। এমন অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আলোচিত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর অপহরণের ঘটনা। ইলিয়াস আলী কি বেচে আছেন? না কি শিকার হয়েছেন হত্যাকাণ্ডের। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এমন সব প্রশ্ন খুজে ফিরেছে ইলিয়াস আলীর পরিবারসহ দেশবাসী।
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু হয় গুম-খুনের বিচার প্রক্রিয়া।
ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় দেওয়া র্যাব সদস্য সার্জেন্ট তাহেরুল ইসলামের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর নির্মম হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে একটি ‘কিলিং স্কোয়াড ইলিয়াস আলীকে গুম করার পর হত্যা করে। হত্যার পর ইলিয়াস আলীর মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় যমুনা নদীতে। এই চাঞ্চল্যকর গুম ও হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাহেরুল বলেন, জিয়াউল আহসানের নির্দেশে ঘটনার রাতে শেরাটন হোটেল থেকে তিনি ইলিয়াস আলীকে অনুসরণ করেন। মহাখালী পৌঁছার পর জিয়াউল আহসান নিজেই আরেকটি টিম নিয়ে ইলিয়াস আলীর গাড়ি অনুসরণ করেন। ইলিয়াস আলীর গাড়ি বনানীর ২ নং সড়কের বাসার সামনে পৌঁছার আগেই বনানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। ইলিয়াস আলীর সঙ্গে তার ড্রাইভার আনসারকেও অপহরণ করা হয়। গাড়িটি জলখাবার হোটেলের সামনে দিয়ে বনানীর ২ নম্বর সড়কে ঢোকার পরে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে।
ইলিয়াসকে হত্যা ছাড়াও র্যাবের জিয়াউল আহসানের কিলিং স্কোয়াডের এক সদস্য একদিনে ১১ জন এবং আরেক সদস্য ১৩ জনকে খুন করেছিল।
জিয়াউল আহসান তখন র্যাবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলে আটক রয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও গুম তদন্ত কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুজন সেনাসদস্য বর্তমানে সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। এরা হলেন ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়া ও ইমরুল। জিয়াউল আহসানের রানার হিসেবে গুম ও খুন মিশনের হুকুম তারা তামিল করতেন। খুনিচক্রের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর গুম তদন্ত কমিশন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিমের সুপারিশের প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী এ দুই সদস্যকে ক্লোজড এবং অন্তরীণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ইলিয়াস আলী সভা করেন তৎকালীন শেরাটন হোটেল যা বর্তমান ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল। সভা শেষ করে রাত ১১টায় গাড়িতে করে বাসায় যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হন ইলিয়াস আলী।