হঠাৎ অবৈধ বাংলাদেশিদের পিছনে কেন উঠে পড়ে লাগলো ভারত?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পিএম
অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতে দিল্লির সকল স্কুলকে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। ২১ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও ডেকান হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলগুলোকে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের পরিচয় যথাযথভাবে শনাক্ত ও যাচাইয়ের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, গত ১২ ডিসেম্বর দিল্লি সরকার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠক করে এমসিডি। সেখানে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে 'প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা' বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের জন্ম সনদ না দেওয়ার জন্য ভারতের জনস্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে এমসিডি-ও তাদের এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলে এবং শিক্ষার্থীদের পরিচয় সঠিকভাবে শনাক্তকরণ এবং যাচাইকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারতে ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ জন্য ডিটেনশন সেন্টার বা আটক কেন্দ্র তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখছি যে অনেকে মাদক ও অবৈধ প্রবেশের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পাশাপাশি অবৈধ বাংলাদেশিরাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তারা সকলেই বিদেশি নাগরিক। তাদের সরাসরি আমাদের জেলে রাখা যায় না। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখতে হয়, তাই বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির জন্য জমি দিয়েছে। কিন্তু সেই জমি ডিটেনশন ক্যাম্পের নিয়ম মেনে চলে না। তাই বিএমসি’র কাছে অন্য জমি চাওয়া হয়েছে যেন মুম্বাইয়ে একটি ভালো ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করা যায়।
এদিকে, অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের খোয়াই জেলা থেকে শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ।২০ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যান। এতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা, ভারতীয় দালালদের সহায়তায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ত্রিপুরা আসেন। পুলিশ জানায়, তারা দিল্লি থেকে খোয়াই এসে ফেরত যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কয়েক দশক ধরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের মধ্যে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে সেই সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের ফলে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশব্যাপী আন্দোলনে পরিণত হয়।বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
এর পরের মাসগুলোতে নানা ঘটনাবলীর প্রেক্ষপটে বাংলাদেশে এক হিন্দু নেতাকে গ্রেপ্তার এবং ভারতে বাংলাদেশের একটি কনস্যুলেটে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতার হামলার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।