যশোরের যে ভিডিও নিয়ে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একটি ভিডিও নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পাশে দুই জন কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে আছেন। মঞ্চের আশপাশে বেশ কয়েকজনকে বক্তব্য শুনতে দেখা যাচ্ছে।
বুধবার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর ওইদিন রাতে হুলস্থুল কাণ্ড তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতির সামাল দিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী জানান, ভিডিওটি যশোর সদর উপজেলার রামনগর রাজারহাট এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার। গত ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর মাদ্রাসাটিতে বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভিডিওটি অনুষ্ঠানের যেমন খুশি, তেমন সাজোর।
মূলত সেই ভিডিওতে তিন জন শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের হামাস সাজে অভিনয় করে এবং ককসিট দিয়ে তারা নকল অস্ত্র বানিয়ে উপস্থাপন করে। এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রধান মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী বলেন, ‘সদর উপজেলাতে অনেক সুনামের সঙ্গে মাদ্রাসাটি পড়াশোনা হয়। মক্তব, হেফজ, কিতাব ও নাজিরা বিভাগসহ চারটি বিভাগের ৪৫০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। প্রতি বছরে মতো এবারও চলতি মাসের ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর মাদ্রাসাতে বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে গজল, বাংলা, আরবি, হামদসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যেভাবে ফিলিস্তিন মুসলমানের পক্ষে হামাস যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়।
ভিডিওটিতে একজন ফিলিস্তিন নেতা সেজে আরবিতে বক্তব্য দেয়। পাশে ককসিট দিয়ে তৈরি নকল অস্ত্র হাতে দুই জন দাঁড়িয়ে থাকে। এটা শুধু মাত্র অভিনয়। এই ভিডিওটি অনেকেই ভিন্ন উদ্দেশ্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসলেই তেমন কিছু বিষয় না।’
এদিকে ভিডিওটি নিয়ে বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে এক বক্তব্যকালে দুই জন প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ খবরে একদল সাংবাদিক ওই মাদ্রাসয় যান এবং বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশও মাদ্রাসায় যায়। তারা মাদ্রাসার শিক্ষকদের যশোর কোতয়ালি থানায় নিয়ে আসে এবং যেমন খুশি তেমন সাজোতে ব্যবহৃত ককসিট দিয়ে তৈরি নকল আগ্নেয়াস্ত্র দুটিও জব্দ করেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী।
এই ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে দেখা গেছে যার সাথে মূল ঘটনার কোন মিল নাই। মূলত গুজব রটিয়ে এটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই তারা অসত্য প্রচারণা চালাচ্ছে বলে মনে করেন নেটিজেনটা।