হারুনের শতকোটি টাকার প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট এখন ভূতের বাড়ি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ এএম
নেই আলোক সজ্বা কিংবা দামি গাড়ির বহর। এক সময় ভ্রমণপিপাসুদের কোলাহলে পূর্ণ থাকা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট এখন কেবলই শুনশান। নামে না হেলিকপ্টারও। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক প্রধান হারুণ অর রশিদের এই প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট জুড়ে এক ভূতুরে পরিবেশ। ৫ আগস্টের পর হারুন আত্মগোপনে চলে গেলে এমন পরিণতি হয় বিলাসবহুল এই প্রমোদশালার।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ফটকে ঝুলছে তালা। কর্মচারী থেকে তত্ত্বাবধায়ক, কাউকে পাওয়া যায়নি। কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরের বেশি জমিতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে হারুন গড়ে তোলেন অত্যাধুনিক এই প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চালু হওয়া এই রিসোর্টে রয়েছে হেলিপ্যাড ও অত্যাধুনিক সুইমিংপুল। বিলাসবহুল সব আসবাবপত্রে সজ্জিত রিসোটের্র প্রিমিয়াম স্যুটে প্রতিদিন থাকার জন্য গুনতে হতো ২০ হাজার টাকা। আর সর্বনিম্ন খরচ ১০ হাজার টাকা।
এক সময় এই রিসোর্ট গমগম করত মন্ত্রী-এমপি, পুলিশ প্রশাসন, অভিনয় শিল্পীসহ ধনার্ঢ্যদের পদচারনায়। হুটহাট উড়ে আসত হেলিকপ্টার। সে সময় একটি কক্ষ বুকিং পেতে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতে হতো। রিসোর্টের দেখভাল করতেন হারুনের ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার।
জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়াসহ অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়া ও ভয় দেখিয়ে নিরীহ ও সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে হারুনের বিরুদ্ধে।
প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে হারুনের পরিবারের মাত্র ৫ থেকে ৭ একর জমি থাকলেও বাকি জমি নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখল করেছেন তিনি। এ ছাড়া যেসব মালিক জমি বিক্রি করেছেন তারা প্রকৃত মূল্য পাননি। প্রকৃত মালিকদের কেউ ১০ লাখের মধ্যে ১ লাখ, কেউ ২০ লাখের মধ্যে ২ লাখ এই হারে টাকা পেয়েছেন। এখনও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন দাম না পাওয়ায় তাদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। ভুক্তভোগীদের একজন দিলীপ কুমার বণিক।অভিযোগ করেন, নামমাত্র টাকা দিয়ে জমি নিয়ে গেছেন হারুন।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন তার সরকারের মন্ত্রী, এমপিসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে থাকা অনেক কর্মকর্তাও। অনেকেই আবার পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে। দিন যত গড়াচ্ছে একে একে বেরিয়ে আসছে পলাতক মন্ত্রী, এমপি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নানা অপকর্ম আর কেলেঙ্কারি। অপকর্মের স্বাক্ষী হয়ে এখন পড়ে রয়েছে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।