যে অজানা কথাগুলো প্রকাশ করে দিলেন মির্জা ফখরুলের মেয়ে!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৮ পিএম
বাবা কারাগারে, মায়ের গুরুতর রোগ শনাক্ত— সেই সব দুর্বিষহ দিনের কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মেয়ে ড. শামারুহ মির্জা। তাঁর পোস্টে রয়েছে আক্ষেপের কথাও।
অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী শামারুহ লিখেছেন, ‘ফোনটা আব্বু করেছিল ২০২২ এ, ৫/৬ ডিসেম্বর। আমাকে বলল আম্মুর ডায়াগনোসিসের রোগ শনাক্তের কথা। আব্বু বলল “চিন্তা করো না মা, ১০ তারিখে সার্জারি করা হচ্ছে, তারপর ফেব্রুয়ারিতে কেমোথেরাপি শুরু।” ৮/৯ তারিখে ভোর ৩/৪টার দিকে আম্মু কল করল। আব্বুকে গভীর রাতে ডিবি পুলিশ এসে নিয়ে গেল। পাগলের মতো হয়ে গেলাম।’
৮ ডিসেম্বর ২০২২ এর দিবাগত মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি। পরে তাঁদের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওদিকে মির্জা ফখরুলের স্ত্রীর দুদিন পরেই অস্ত্রোপচার। শামারুহ মির্জা লিখেছেন, ‘ডিসেম্বর মাস। বিমানের টিকিট পাচ্ছি না। যেটা পেলাম, আকাশচুম্বী দাম। আমার তো যেতে হবেই। চলে গেলাম ঢাকা। আব্বুর সঙ্গে দেখা করতে ভীষণ কড়াকড়ি। সুযোগ পেলাম। আব্বুর চোখভরা পানি—“মা, তুমি দেখো তোমার মায়ের ব্যাপারটা।”
শামারুহ জানান, তিনি পরে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে তাঁর মায়ের অস্ত্রোপচারের তাগিদ দেন। দিন নির্ধারিত হয়। কিন্তু বেঁকে বসেন তাঁর মা। শামারুহ লিখেছেন, ‘আম্মু বলল, “তোমার আব্বুকে ছাড়া অস্ত্রোপচার করব না”। অনেক বোঝালাম। রাজি হলো। সেদিন পুরো হাসপাতালে আমরা দুই বোন। ইউনুস ভাই। আর জাহিদ চাচা। জাহিদ চাচার কথা কি বলব! নিজের চাচার থেকেও বেশি।’
শামারুহ জানান, অস্ত্রোপচারের সে দুঃসহ সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে ফোন করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমানও কথা বলেছেন। অনেকেই এসেছেন। নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারেক রহমানকে একজন অসাধারণ মানুষ হিসেবেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুলের মেয়ে। দুদিন পরে মির্জা ফখরুল জামিন পান।
২০২৩ সালের মার্চে মির্জা ফখরুলসহ তাঁর পরিবারের সবাই সিঙ্গাপুরে যান। উদ্দেশ্য রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসা। সেখানে চিকিৎসকেরা দ্রুত কেমোথেরাপি শুরু করতে বলেন। তাঁরা দেশে ফেরেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কেমো শেষ হয়। এরপর রেডিয়েশন থেরাপি। তার আগে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক দেখা করতে বলেন। মির্জা ফখরুল স্ত্রীকে নিয়ে যান সিঙ্গাপুরে। শামারুহ সেখানে যান অস্ট্রেলিয়া থেকে।
সেই ঘটনা উল্লেখ করে শামারুহ লিখেছেন, ‘[আব্বুর] অসুখ তো আর কমে না। ডক্টর বলল, মানসিক চাপ নেওয়া ছাড়েন। তাইলে শরীর ঠিক হবে।’ অন্যদিকে চিকিৎসক রাহাত আরা বেগমকে এক বছর পরে আসার পরামর্শ দেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে মির্জা ফখরুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই ঘটনা উল্লেখ করে শামারুহ লেখেন, ‘আব্বুকে আবার জেলে নিয়ে গেল! আর ভাললাগে না। আমি দেশে গেলাম আবার। তারপরের ঘটনা নিয়ে আরেকটি অধ্যায় লেখা যাবে।’
যোগাযোগ করা হলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা শামারুহ গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁর বাবা বহু বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। কারাগারে কাটিয়েছেন। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তাঁর এই ত্যাগ। কিন্তু পরিবারকে এ জন্য অনেক ভুগতে হয়েছে। তাঁরা সেটা মেনেও নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু এমন একজন মানুষকে নিয়ে যখন অপপ্রচার