চিকিৎসা পেতে হলে ভারতের পতাকায় প্রণাম করতে হবে বাংলাদেশিদের!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
সম্প্রতি ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ গ্রেপ্তার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিয়ে অতিরঞ্জিত খবর প্রচারসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলে আসছে ভারত সরকার। এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটের সামনে ভারতের পতাকার নকশা এঁকে সেটির উপর হেঁটে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। এমন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতের পতাকা অবমাননার অভিযোগ এবং হিন্দুদের ওপর কথিত হামলা বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দেয় কলকাতার একটি হাসপাতাল। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি ভারতীয় হাসপাতালও বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেয়ার কথা জানিয়েছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা দিতে শর্ত জুড়ে দিয়েছেনে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির এক চিকিৎসক। এর জন্য ভারতীয় পতাকায় প্রণাম করে তার চেম্বারে প্রবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছেন শিখর বন্দোপাধ্যায় নামের ওই চিকিৎসক। সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভারতের পতাকাকে অবমাননা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি কষ্ট পয়েছেন। কিন্তু তিনি রোগীদের ফিরিয়ে দিতে চান না। তার মতে যারা ভারতে যাবে তাদের ভারতের পতাকাকে সম্মান জানাতে হবে।
চিকিৎসক শিখর বন্দোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের স্পেশাল মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। শিলিগুড়িতে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে একটি বার্তাসহ একটি জাতীয় পতাকা ঝুলিয়ে রেখেছেন তিনি। পতাকার ওপর থাকা বার্তায় লেখা রয়েছে, ‘ভারতবর্ষের জাতীয় পতাকা তাদের জন্য মাতৃসম। তাই বাংলাদেশ থেকে আগত রোগীরা প্রণাম না করলে এখানে রোগী দেখা হবে না।’
এদিকে, চন্দ্রনাথ অধিকারী নামের অপর এক চিকিৎসক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, তিনিও যে সরকারি হাসপাতালে কাজ করেন সেখানে সবাইকে চিকিৎসা দেবেন। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত চেম্বারে কোনো বাংলাদেশি রোগীকে তিনি দেখবেন না।
নারায়ণা হেলথের এক প্রতিনিধি জানান, ভিসা সমস্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভারতে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ১৮০–২০০ থেকে ৬০–এ নেমে এসেছে। ভিসা দেওয়া বন্ধ থাকায় আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও কমতে পারে।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে ‘অস্বাভাবিক অবস্থার’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক। সবশেষ সম্প্রতি ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ গ্রেপ্তারের জেরে বাংলাদেশকে নিয়ে “অতিরঞ্জিত” খবরে সয়লাব হয় ভারতীয় মিডিয়াগুলো। এতে আরও তিক্ত হয়েছে প্রতিবেশী দু’দেশের সম্পর্ক।