শেখ হাসিনার ১০০ দিন: কীভাবে রয়েছেন, সামনেই বা কী হবে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুথানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর তাকে নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নাই। কিভাবে আছেন,কোথায় আছেন, আগামীতে কোথায় যাবেন এমন অনেক প্রশ্ন এখন জনমনে। শেখ হাসিনা যখন ভারতে পা রাখেন, দিল্লির বিশ্বাস ছিল তার এই আসাটা একেবারেই সাময়িক হবে। ইউরোপ কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে যাওয়ার আগে এটা একটা সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি হবে বলেই মনে করেছিলেন ভারত।
যে কোনো মুহূর্তে তৃতীয় কেনো দেশের উদ্দেশে তিনি রওনা হয়ে যাবেন, এই ধারণা থেকেই প্রথম দু-চারদিন তাকে ও সঙ্গে বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিং-এ, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশটির বিমান বাহিনীর। ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে একটা প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে,শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে? আর সেটার পেছনে কারণটাই বা কী?
শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনো দেশে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাকে হিন্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কাছাকাছি কোনো গোপন ঠিকানায়। যে ব্যাপারে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি। ভারতের রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে যে ইনার রিং রোড, তার ঠিক ওপরেই চারতলা পেল্লায় বাড়িটা। ডাক বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী ঠিকানা ৫৬ রিং রোড, লাজপত নগর, দিল্লি ১১০০২৪।
লাজপত নগরের সেই ভবনে এসে ওঠার ঠিক ৪৯ বছর পর বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা যখন আরও একবার ভারতে এসে আশ্রয় নিলেন – তখনও কিন্তু শহরে তার প্রথম ঠিকানায় তিনি থিতু হননি। পাশাপাশি এই চরম অস্বাভাবিক একটা পরিস্থিতিতে তিনি স্বাধীনভাবে কতটা কী করতে পারছেন? অথবা তাকে কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কৌতুহল রয়েছে।
ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন,সরকারি পদমর্যাদা ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি বিবেচনায় ভারতের ভিভিআইপিরা বিভিন্ন ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন– যার মধ্যে ‘জেড প্লাস প্লাস’-কেই সর্বোচ্চ বলে ধরা হয়। ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে, যিনি গত একশোদিন ধরে ভারতে শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপের বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত করেছেন,ক্ষুদে বার্তায় তিনি ছোট ছোট তিনটে বাক্যে এই প্রশ্নের যে উত্তর দিয়েছেন।
প্রথমত হাসিনাকে চরম গোপনীয়তাই রাখা হয়েছে, দ্বিতীয়ত তাকে সাদা পোশাকের রক্ষীরাই ঘিরে রেখেছেন, আর তৃতীয়টি হলো তার মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার কথা থেকে স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনার জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও সেটা খুব বিশেষ এক ধরনের আয়োজন–শেখ হাসিনাকে যাতে কোনভাবেই প্রকাশ্যে না-আসতে হয়, এই প্রোটোকলে সেই চেষ্টাও বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
তবে শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে যে দেশের আতিথেয়তায় আছেন তারা কিন্তু এখনই অতটা আগ বাড়িয়ে ভাবতে রাজি নয়।ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা উপযুক্ত সুযোগ এলে সেটা কাজে লাগাবেন বলে অনেকে ধারনা করছে। একশো দিনের মাথায় ভারতও আপাতত এটুকুতেই তাদের ভাবনা সীমিত রাখছে!