যেভাবে টেম্পু চালক থেকে ক্ষমতার জোরে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বাবু

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট, সালিশ বাণিজ্য, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা অনিয়মে শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন পাবনার বেড়া উপজেলার সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু। ক্ষমতার দাপটে উপজেলার কাশীনাথপুর, আমিনপুর বাজার, নগরবাড়ি ও কাজীরহাট ঘাটে একক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গড়েন বাবু। সরকার পতনের পর এলাকা ছেড়ে পালানো উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু ও তার ভাইয়ের শাস্তির দাবিতে এখন ফুঁসে উঠেছেন নির্যাতিত এলাকাবাসী।
এক সময় সাধারণ এক টেম্পু চালক ছিলেন বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান ও পরে বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বাবু। এতেই খুলে যায় তার ভাগ্য। ছোটভাই মোখলেসুর রহমান মুকু ও স্থানীয় সন্ত্রাসী মাইট্যা রাজ্জাককে দিয়ে এলাকায় শুরু করেন চাঁদাবাজি ও অবৈধ বালু ব্যবসা। দখল করেন বাস মালিক সমিতি, নগরবাড়ী ঘাট বণিক সমিতি।
সরকারি বিধি অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে নগরবাড়ি ঘাট, কাজীরহাট ঘাট ও স্পিডবোট ঘাটের ইজারাও দখল করেন বাবু। ভুক্তভোগীদের দাবি, বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এসব পয়েন্টে বাবু ও মুকুকে চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করাই ছিলো অসম্ভব।
কেবল চাঁদাবাজিই নয়, এলাকায় কোন জমি পছন্দ হলেই তা মুকুকে দিয়ে দখল করে নিতেন বাবু। এলাকার নদী ও মুক্ত জলাভূমি দখল করে তৈরি করেছিলেন মাছের খামার। সামাজিক সমস্যায় সালিশ বাণিজ্য করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো রায় দিতেন তারা। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সৈয়দপুর গ্রামের অসংখ্য বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে গ্রামবাসীকে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করে বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী। নির্মম নির্যাতন চালানো হয় নারী ও বৃদ্ধদের উপর। অন্যের জমিতে জোরপূর্বক তৈরি করেন বহুতল ভবনও।
একসময় টিনের ঘরে বাস করলেও উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে নিজ গ্রামে আলিশান বাড়ী করেছেন বাবু। কিনেছেন ঢাকার বসুন্ধরায় ফ্লাট, পাবনা শহরে জজকোর্ট এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি। সরকার পতনের পরেও বাবু, মুকু ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় হতাশ এলাকাবাসী। বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী ভুক্তভোগীদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কাশীনাথপুরে ছাত্রদের উপর হামলা বাবুর নেতৃত্বে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। সরকার পতনের পর রাতারাতি এলাকা ছেড়ে পালানো বাবুর বিরুদ্ধে নারী ধর্ষণ ও হত্যা, প্রতারণা ও ছাত্রদের উপর হামলার কয়েকটি মামলা রয়েছে।