আইরিনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আবারো আলোচনায় ‘আকাশ পরিবহন’

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৩ পিএম
আইরিনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছে নেক্সট ভেঞ্চার নামে একটি আর্থিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি। ৯ অক্টোবর তাসনিম জাহান আইরিন এবং নুসরাত জাহান জেরিন বাড্ডায় প্রগতি সরণি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে আকাশ পরিবহনের বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় পড়েন। আইরিন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, গুরুতর আহত হন জেরিন। আর এই ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় উঠেছে ‘আকাশ পরিবহন’।
তাসনিম জাহান (আইরিন) নেক্সট ভেঞ্চার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। আইরিনের মৃত্যুর পর তার স্মৃতিকে স্বরণে রাখার জন্য অভিনব সব উদ্যোগ গ্রহণ করে নেক্সট ভেঞ্চার নামে প্রতিষ্ঠানটি। আর তা নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি যা, রীতিমতো ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
রাজধানীতে ২০০৯ সালে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় বাংলাদেশ বিইউপি ছাত্র আবরার নিহতের ঘটনায়, পরিবহনটির নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করে দেয় বিআরটিএ। ‘দুর্ঘটনাজনিত কারণে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ অনুযায়ী বাসটির রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।’ বিআরটিএর এই সিদ্ধান্তের ফলে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি আর সড়কে চলতে পারবে না বলে জানানো হয়।
২০১৯ সালের সেই দুর্ঘটনার পর মামলাসহ ঝামেলা এড়াতে কোম্পানির নাম ও বাসের রং পাল্টে ফেলা হয়। কিন্তু বাস ও চালক একই ব্যক্তিরা থাকেন। এরপর রাতের আধাতে ওই কোম্পানির সবগুলো বাসের রং পাল্টে ফেলা হয়। নাম দেয়া হয় ভিক্টর পরিবহন, ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনসহ নানা নামে। কিছুদিন সহনীয়ভাবে যাত্রী নিয়ে চলাচল করলেও এরপর তারা বেপরোয়া হয়ে পড়েন। গাজীপুর থেকে টঙ্গী, আব্দুল্লাহপুর, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, পল্টন, গুলিস্তান হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত ভিক্টর পরিবহনের নামে বাস চলে। সব বাসই এক সময় ছিল সুপ্রভাত কোম্পানির নামে।
২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় হওয়া সত্ত্বেও, সেই একই বেপরোয়া বাসগুলো এখনও কীভাবে আমাদের সড়কে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। আর এভাবেই দিনের পর দিন কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য নিষ্পাপ প্রাণ।
আইরিনের মৃত্যুর দিন ২৫টি বাস এবং বাসগুলোর চালকদের আটক করা হয়। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য। বাসগুলোর কোনোটিরই সঠিক কাগজপত্র ছিল না। ১৭ জন চালকের মধ্যে ১৪ জনের বৈধ লাইসেন্স ছিল না। কিছু বাসের চালক ছিল হেলপার বা সহকারী, যাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছিল না। কোনো বাসই রাস্তায় চলার উপযোগী ছিল না।
আর কত প্রাণ হারালে এই ‘হত্যাকাণ্ড’ বন্ধ হবে জানতে চান সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছেন এখনই সময় সকলের নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার, কারণ এই ঘটনার পরও যেন কিছুই ঘটেনি এমন ভাবেই বাসগুলো আবার রাস্তায় ফিরে এসেছে। ২০১৯ এ কোন পরিবর্তন হয়নি, কিন্তু এই ২০২৪ এর নতুন বাংলাদেশে এসেও ব্যর্থ হেত চায় না সাধারণ জনগণ।