সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলের অবৈধ অর্থের ‘মাস্টারমাইন্ড’ দুই পিএ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
চাকরি বাণিজ্য ও মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনা, মামলা দিয়ে হয়রানি থেকে শুরু করে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা করেননি আলাউদ্দিন বাবু ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ। আর এই দুজনই ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ব্যক্তিগত সহকারী। গত এক দশকে বানিয়েছেন ঢাকা ও এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট, বহুতল ভবন ও কোটি কোটি টাকা।
সাবরেজিস্ট্রার বদলির ৯০ ভাগই হতো বাবু ও সোহাগের হাত ধরে, নিতেন ৪০ লাখ থেকে দুই কোটি টাকা। ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট ও বহুতল ভবন রয়েছে তাদের নামে-বেনামে। সোহাগ-বাবুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল মন্ত্রণালয় ও এলাকার মানুষ সাধারণ মানুষ। আপস…
একসময় এলাকাজুড়েই ফেসবুকে চলত সোহাগ-বাবুর বন্দনা। তবে বেশির ভাগ মানুষই ছিল তাদের অত্যাচারে বিক্ষুব্ধ, তবে নিশ্চুপ। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তারা দুজনই বিদেশে পালিয়েছেন। ২০১৩ সালে কিছুটা ভালো থাকার নিশ্চয়তার জন্য বাবু পাড়ি জমান বাহরাইনে। এসএসসি পাশ করতেও একাধিকবার পরীক্ষার হলে বসতে হয়েছে বাবুকে।
আনিসুল হক প্রথমবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ-সদস্য ও মন্ত্রী হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে দেশে ফিরে আসেন বাবু। মন্ত্রীর বাসার কাজের লোক হিসাবে তার যাত্রা শুরু হয়। মন্ত্রীর গুলশান অফিসে যাওয়া-আসা ছিল-এমন কয়েকজন জানান, ২০১৫-২০১৮ সালে মন্ত্রীর অফিসে চা পরিবেশন করতেন বাবু।
প্রথমদিকে ৫শ-হাজার টাকা পেলেই খুশি হতেন। একসময় বান্ডিল ছাড়া নিতেন না। মন্ত্রীর সাবেক এপিএস রাশেদুল কাওসার কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর বাবু হয়ে উঠেন সবকিছুর হর্তাকর্তা। ২০১৮ সালে পিএ পদে নিয়োগ পাওয়ার পর বাবুর অন্যরূপ বেরিয়ে আসতে শুরু করে।
সাবেক আইনমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বাবু এবং সোহাগের অপকমের্র কথা বলে শেষ করা যাবে না। কী হতো না তাদের ইশারায়। তাদের অপকমের্র কারণে আজ আনিসুল হকের এই অবস্থা। তাদের অত্যাচারের ক্ষোভে মন্ত্রীর বাড়িটাও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী। গত ১০ বছর বাবু-সোহাগের ভয়ে এলাকায় কথা বলতে পারেনি কেউ।
কর্কশ আচরণের কারণে মানসম্মান হারানোর ভয়ে মন্ত্রীর গুলশানের অফিসে যাওয়া ছেড়ে দেন অনেকেই। মন্ত্রীর পিএসসহ অন্য স্টাফরা বাবুর কাছে হয়ে পড়েন অসহায়। এদিকে পিএ হওয়ার পরই যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান বাবু। থানার দারোগা-ওসি, সাবরেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার বদলি বাণিজ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার দোকান খুলে বসেন।