শত শত মানুষের বুক ফাটা আর্তনাদ, শোনার কেউ নেই

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম
সোহলে রানা। কমলাপুর স্টেশনের সাথে তার শখত্য ১২ বছরের। কুলির কাজ করে বেশ ভালোই চলছিল তার জীবন। কিন্তু গেল কয়েক দিনে দেশজুড়ে অস্থিতিশীলতায় অর্ধহার-অনাহার এখন তার নিত্যসঙ্গী। এমন চিত্র এখন দেশজুড়ে অনেকের। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের হিসাব নিকেশ তার মতো অনেকেই বুঝেন না। তবুও জীবন তো থেমে থাকে না।
১২ বছরের সাব্বির জীবন মানে তার কমলাপুর স্টেশনে আমড়া-পেয়ারা বিক্রয় করা। আর এর বাহিরে মাকে নিয়ে সুখ-দুখ ভাগ করে সংসার চালানো। দেশজুড়ে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের যাতাকলে পিষ্ট তার জীবনও। মায়ের একমাত্র অন্ধের ষষ্ঠী এখন দিশেহারা সংসারে চাল-ডাল কিনতেই।
শুধু সোহল রানা কিংবা সাব্বির নয়, এই কাতারে আছেন তানিয়া বেগম নামের সংগ্রামী এক নারীও। গত ১৫ বছর ধরে তিনি ভাত বিক্রি করেন কমলাপুর স্টেশনে। আর এই আয় দিয়ে চলে তার ৬ জনের সংসার। দেশের বর্তমান অবস্থায় ট্রেন চলাচল বন্ধে তার জীবনে নেমে এসেছে দুর্যোগের ঘনঘটা।
গত ১২ দিন ধরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। আর দেশজুড়ে সহিংসতায় নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ। স্টেশনে যাত্রী না থাকায় বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটছে অনেকের। এই অবস্থায় পকেটে টাকা না থাকায় পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ তার চোখে-মুখে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ট্রেনের বগি। ভাঙচুর করা হয়েছে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেলপথ। তদন্ত কমিটি জানিয়েছে- রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি টাকারও বেশি।
রেলওয়ের তদন্ত কমিটি বলছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় চারটি ট্রেনের ৪০টি বগি ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে ট্রেন চলাচল না করায় সারা দেশের বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।
জনগণের নিরাপত্তায় কারফিউ জারি করে সরকার। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত ১৮ জুলাই থেকে সব ধরনের রেল চলাচল বন্ধ রাখে। কার্যত এর পর থেকে আর কোনো রেল চলাচল করেনি। ফলে ট্রেন বন্ধ থাকা প্রতিদিন কোটি টাকারও বেশি লোকসান হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের।