এমন সর্বনাশের জন্য আল্লাহর কাছে বিচার চাইলেন বাক-প্রতিবন্ধী যুবতী

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
বাক-প্রতিবন্ধী যুবতী আকলিমা খাতুন। কোলে এক বছরের ফুটফুটে পুত্র সন্তান। তাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এদিক ওদিক।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে আকলিমা জন্ম দেয় এই পুত্র সন্তানটি। নাম রাখেন ইয়াছিন আরাফাত। কিন্তু অসহায় এই শিশুটি কখনোও পাবে না তার পিতৃ পরিচয়। তাতে কী? শত দুঃখ-কষ্টের মাঝেও সন্তানকে পরম স্নেহ-ভালোবাসায় আগলে রেখেছেন বাক-প্রতিবন্ধী আকলিমা।
নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামের দিনমজুর নুরুন নবীর মেয়ে আকলিমা খাতুন। ৬ বছর বয়সে টাইফয়েড জরে আক্রান্ত হয়ে হারিয়ে ফেলেন বাক-শক্তি।
সেই থেকে শারীরিক কর্ম ক্ষমতা থাকলেও কথা বলতে পারেন না আকলিমা। দরিদ্র ঘড়ের মেয়ে হওয়ায় বিভিন্ন বাড়িতে জিয়ের কাজ করতেন তিনি। কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে তার জীবনে ঘটে সবচেয়ে বড় সর্বনাশ।
গেল বছরের জানুয়ারির দিকে আকলিমার শারীরিক গঠন দেখে মা আর প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়, পরে চিকিৎসকের সহযোগিতায় জানতে পারেন আকলিমা গর্ভবতী। কিন্তু বাক-প্রতিবন্ধী হওয়ায় ঘটনার কিছুই বলতে পারেননি আকলিমা।
এদিকে মেয়ের এমন ঘটনা জানার কিছু দিনের মধ্যে মারা যান আকলিমার মা। ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে যাননি কোন মামলা মোকাদ্দমায়। তবে মেয়ের এমন সর্বনাশের জন্য আল্লাহর কাছে বিচার চাইলেন আকলিমার বাবা।
বাক-প্রতিবন্ধী যুবতীর এমন সর্বনাশ দেখে হতাশ এলাকাবাসীও। তারা নিজেদের সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আকলিমা ও তার সন্তানের জন্য।
পিতৃ পরিচয়হীন শিশু ইয়াছিন আরাফাত ও তার বাক-প্রতিবন্ধী মায়ের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওয়ায় আনা হবে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
বাক-প্রতিবন্ধী আকলিমার সাংকেতিক ভাষার বিশ্লেষণ করে তার সর্বনাশের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীর পরিচয় সনাক্ত এবং আকলিমা ও তার শিশু পুত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তাদের জন্য সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।