বাবার অস্বীকৃতি, রাগ-অভিমানে আত্মহননের চেষ্টা ইফাতের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
১২ লাখ টাকার ছাগল যেন পাগল করে দিয়েছে দেশবাসীকে। ছাগলের ছাগলামীতে উত্তপ্ত সামাজিক মাধ্যম।
সত্যি কি ছাগল পাগল বানিয়ে দিয়েছে ইফাত ও তার বাবা মতিউরকে? নাকি তারা ছাগলকে পাগল বানিয়েছে? যেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের কোটি টাকার বাগান খেল ১২ লাখ টাকার ছাগলে।
শুধু তাই নয় উচ্চবংশীয় ক্ষমতাশীল এই ছাগল যেন বাবা ছেলের বংশের পরিচয়টাও আজ মুছে দিয়েছে। বাবা ছেলের সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে লাখ টাকার ধুসর বর্ণের এই ছাগল। যেন সম্পর্ক বদলে গেল একটি ছাগলে।
কে ছাগল আর কে পাগল এমন প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে ঠিক তখন একে একে বেরিয়ে আসতে লাগল ছাগলকাণ্ডের অনেক তথ্য।
এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হলে প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকীর সঙ্গে আলোচনা করে পারিবারিক ড্রামা সাজান মতিউর। মিডিয়ার সামনে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান মুশফিকুর রহমান ইফাতের সঙ্গে তার সম্পর্ক অস্বীকার করেন। এতে বাঁধে জট। বাবার অস্বীকৃতিতে পারিবারিক টানাপড়েন চরমে ওঠে। সন্তান ইফাত রাগ-অভিমানে চেষ্টা চালান আত্মহননের।
সবশেষ মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলী, ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফান দেশত্যাগ করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। বুধবার চট্টগ্রাম হয়ে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে দেশত্যাগ করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চাকরি জীবনের শুরু থেকেই নামে-বেনামে সম্পদ গড়েছেন মতিউর। কর ফাঁকির সুবিধা দিয়ে দেশের নামি-দামি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের সঙ্গে ব্যবসায়িক কানেকশন গড়ে তোলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রাজস্ব আয় বাড়ানোর গুরু দায়িত্বে থেকে সরকারকে রাজস্ববঞ্চিত করে গুছিয়েছেন নিজের আখের। স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে গড়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ। কিনেছেন দামি গাড়ি, বাড়ি। তিনি হাতে পরেন ৩১ লাখ টাকার বেশি দামের রোলেক্স ঘড়ি।
চাকরি জীবনের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে ছাগলকাণ্ডে ফেঁসে গেছেন প্রভাবশালী এই সরকারি কর্মকর্তা। কুরবানির জন্য ১২ লাখ টাকায় ছেলের কেনা ছাগল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বাবার পরিচয়ে টান পড়ে।
আর তাই অনেকেই এই ছাগলকে আর্শীবাদ হিসেবেই দেখছেন। মনে করছেন এই ছাগলের কল্যাণেই বেরিয়ে এসেছে তার পাহাড় সমান সম্পদের তথ্য।
তবে মতিউর আর ইফাতের সম্পর্ক কি আসলেই বাবা ছেলে? তা খুঁজে বের করা কী সত্যিই কঠিন, মোটেও না। অনেকে বলছেন ডিএনএ টেস্টই বাবা ছেলের পরিচয় বের করার সহজ উপায়। আর এতেই সমাধান মিলবে মতিউরের সাজানো ড্রামার।
শেষ করব গায়ক আবু বকর সিদ্দিকের সেই বিখ্যাত গানটা দিয়ে, ‘মরি হায় রে হায় দুঃখে আগুন জ্বলে, হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচ সিকার ছাগলে।’