চলে গেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, রেখে গেছে শত সহস্র ক্ষত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল চলে গেলেও রেখে গেছে শত সহস্র ক্ষত। রেমাল তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি নিন্ম আয়ের মানুষদের কাচা ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমিসহ ফলদ গাছও। রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ২২ ঘণ্টা রেমাল তাণ্ডব উপকূলবাসীর মাঝে আতংক সৃষ্টির পাশাপাশি বিস্মিত করেছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে ঘূর্ণিঝড় দেখেনি উপকুলবাসী। উপকুলবাসীদের চারদিক দিয়ে আঘাত হেনেছে রেমাল।
শনিবার রাত থেকে রেমালের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আর এতে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় পুরো উপকূল। সাথে ইন্টারনেট, ক্যবল নেটওয়ার্ক বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পরে। বিদ্যুৎ না থাকায় আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোতে পানির সংকট দেখা দেয়। চারদিন বিদ্যুৎ হীন ছিল।
রেমালের তাণ্ডবে বাড়িঘর, গাছপালা,ফসলি জমিসহ আবাসিক হোটেল মোটেলগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাইনবোর্ড, পানির ট্যাংকি বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ভারী থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত এবং জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে নিন্মাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাব পুরো দেশের উপর পরবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে শুধু কলাপাড়ায় মৎস্য খাতে ১৫'শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কৃষি খাতে দুই কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়। পর্যটন খাতেও অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ।
তবে তাণ্ডব চলে গেলেও এখন পর্যন্ত পৌঁছায়নি সরকারি ত্রাণ সহায়তা। বেসরকারি সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দুর্যোগ কবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতেও দেখা যায়নি।
জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক তথ্যমতে, জেলায় ৯ হাজার ১শ ৫ টি পুকুর, ৭শ ৬৫ টি মাছের ঘের এবং ১শ ২০টি কাঁকড়া ঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে মৎস্য চাষীদের ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৩ হাজার ৫শ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা।
এছাড়াও পটুয়াখালীতে ৩ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া উপজেলায় ৪ কিলোমিটার বেরীবাঁধ আংশিক বিধ্বস্ত হয়ে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।