এক ভয়ানক প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন হাজিরা!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০৬:৫১ পিএম
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত এসেছেন এমন ১২ জনের শরীরে প্রাণঘাতী মেনিনোকোকাল রোগের উপসর্গ শনাক্ত করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর জন্মস্থান পবিত্র মক্কা নগরী ইসলাম ধর্মের একটি তীর্থস্থান। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য সারা বছর ধরে মক্কায় ওমরাহ পালন করা যেতে পারে। সামর্থ্যবান মুসলমানরা তাদের জীবনে অন্তত একবার হজ বাধ্যতামূলকভাবে পালন করেন। এ বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা পালিত হবে ১৪ থেকে ১৯ জুন। তাই এখনই বিশেষ সতর্কতার কথা জানিয়েছে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিডিসি।
এই বছর মেনিনোকোকাল রোগে আক্রান্ত হজযাত্রীদের মধ্যে পাঁচজন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। ফ্রান্সে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ এবং যুক্তরাজ্যে ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জনই মক্কায় গিয়েছিলেন এবং দু'জন সৌদিফেরত নাগরিকের সংস্পর্শ বা ঘনিষ্ঠতায় ছিলেন।
মেনিনোকোকাল প্রতিরোধী টিকা না নেয়া ব্যক্তিদের সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ মেনিনজাইটিসসহ মেনিনোকোকাল রোগ হচ্ছে একটি অস্বাভাবিক অসুস্থতা যা নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্ট। এটি মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের আস্তরণে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি সারাজীবন ভুগতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি স্মৃতিবিভ্রম এবং মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থতা, খিঁচুনি, মানসিক ভারসাম্যে সমস্যা, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া এবং অন্ধত্বের শিকার হতে পারেন। এই রোগের ব্যাকটেরিয়া সেপ্টিসেমিয়া বা রক্তের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অনেকে গুরুতর রক্তের সংক্রামক রোগেও আক্রান্ত হতে পারেন এর ফলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যথাযথ চিকিৎসা পাওয়া সত্ত্বেও এই রোগে আক্রান্ত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ মারা যায়। সিডিসির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই বছর, মার্চের শেষ পর্যন্ত ১৪৩ জনের শরীরে এই ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৮১ জনের।
এদিকে চলতি বছর হজ আয়োজনে ব্যাপক কড়াকড়ি করছে সৌদি সরকার। কিছুদিন আগেও হজের ভিসা প্রাপ্তদের জন্য বেশ কিছু আদেশ-নিষেধ জারি করেছিল সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি অসুস্থ কিংবা রোগাক্রান্ত হজযাত্রীদের জন্য নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে- যাদের দীর্ঘমেয়াদী রোগ রয়েছে তাদের হজে আসার সময় সঙ্গে করে অবশ্যই চিকিৎসার নথিপত্র নিয়ে যেতে হবে। মূলত যারা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তারা যেন হজে এসেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান সেটি নিশ্চিতেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।