আকাশপথে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে যেসব বিশ্বনেতা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরসহ কয়েক জন কর্মকর্তা। গতকাল থেকে এ নিয়েই তোলপাড় বিশ্বের গণমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়া।
তবে আকাশপথে দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। বিশ্বনেতাদের এমন মৃত্যু জনগণকে শোকস্তব্ধ করেছে। আর দেশগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়। পাশাপাশি ক্ষমতাকাঠামোয় তৈরি করে শূন্যতা।
বিশ্বের প্রথম বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা জানা সুইডেনের দুই বারের প্রধানমন্ত্রী স্যালোমন আরভিড আচেটস লিন্ডম্যান। তিনি একজন প্রভাবশালী, রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৩৬ সালের ৯ ডিসেম্বর এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
ঐ দিন ঘন কুয়াশার মধ্যে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাজ্যের ক্রয়ডন বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয় তার বিমান। লিন্ডম্যানকে বহনকারী বিমানটি ছিল ডগলাস ডিসি-২ মডেলের।
ফিলিপাইনের সপ্তম প্রেসিডেন্ট র্যামন ম্যাগসেসে কঠোর দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও জনতাবাদী আবেদনের জন্য পরিচিত ছিলেন। ১৯৫৭ সালের ১৭ মার্চ সেবু শহরের মাউন্ট মানুংগালে বিধ্বস্ত হয় তাকে বহনকারী বিমান। ঐ দুর্ঘটনায় ২৫ জন আরোহীর মধ্যে মাত্র এক জন বেঁচে ছিলেন।
ইরাকের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট আবদুল সালাম আরিফ ১৯৫৮ সালের বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা দেশটি থেকে রাজতন্ত্র উৎখাত করেছিল। ১৯৬৬ সালের ১৩ এপ্রিল ইরাকি বিমানবাহিনীর একটি প্লেন বসরার কাছে বিধ্বস্ত হলে- নিহত হন তিনি।
ব্রাজিলের ২৬তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন হামাবার্তো দে অ্যালেনসার কাস্তেলো ব্রাংকো। তিনি ১৯৬৭ সালের ১৮ জুলাই নিহত হন। প্রেসিডেন্ট পদে মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাকে বহনকারী প্লেন ব্রাজিলীয় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ প্লেনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। ব্রাংকোর মৃত্যু নিয়ে দীর্ঘ দিন বিতর্ক ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব চালু ছিল।
এই তালিকায় আছে ইন্ডিয়ার নামও। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পুত্র ও কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় গান্ধী ১৯৮০ সালের ২৩ জুন নিহত হন। তার প্লেন দিল্লির বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে সঞ্জয়ের মৃত্যু হয়।
সময়টা ১৯৮৭ সালে ১ জুন। লেবাননে ধারাবাহিকভাবে সর্বাধিক বার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী রশিদ কারামি। রাজধানী বৈরুত যাওয়ার পথে তার হেলিকপ্টারে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কারামি নিহত হন। আর আহত হন কয়েক জন আরোহী।
পাকিস্তানের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট জেনারেল মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক। তাকে বহনকারী সি-১৩০ হারকিউলিস প্লেন বাহাওয়ালপুর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়ে তিনি নিহত হন। সময়টা ১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট। এই দুর্ঘটনার পেছনে যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে নাশকতা পর্যন্ত নানা তত্ত্ব ছড়িয়েছে। কিন্তু প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ আজও রহস্য এর বৃতেই রয়ে গেছে।
চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিমেরা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিহত হন। তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার দক্ষিণ চিলির একটি হ্রদে বিধ্বস্ত হয়। পিমেরা পরপর দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।