রাইসির চলে যাওয়ায় যেভাবে পাল্টে যাবে ভূরাজনৈতিক সমীকরণ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
কয়েক বছর ধরে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে অনেক টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। কারণ মূলত তেহরানের পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের প্রচেষ্টা। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে পিছিয়ে যান এবং দেশটির বিরুদ্ধে অসংখ্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যার ফলে পারমাণবিক চুক্তিতে বর্ণিত কিছু শর্ত লঙ্ঘন করে ইরান।
২০২১ সালে ক্ষমতাগ্রহণের পর দর কষাকষিতে কঠোর অবস্থান নেন রাইসি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন মতে, ইরানের অত্যাধুনিক পারমাণবিক প্রযুক্তির উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় কিছুটা রাশ টেনে ধরার বিনিময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধের একটি বড় অংশ থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ দেখতে পান। গাজার সংঘাত ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় ছিল বাইডেন প্রশাসন। যার ফলে বেসামরিক নাগরিকদের জীবনের সুরক্ষা দিতে ইসরায়েলকে বারবার চাপ দিতে থাকে ওয়াশিংটন। বাইডেন এমনকি ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করার ও নীতিমালা পরিবর্তনের হুমকিও দেন।
কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইরানের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আলোচনা চালাচ্ছিলেন যেন অন্যান্য দেশে সংঘাত ছড়িয়ে না যায়। তবে রাইসির মৃত্যুতে খানিকটা হলেও এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা দেখা দেওয়ার হুমকি দেখা দিয়েছে।
দি ইকোনমিক টাইমস বলছে, রাইসির মৃত্যু ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ ইসরায়েলবিরোধী হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন রাইসি। রাইসির মৃত্যুতে নেতৃত্বের পরিবর্তনে ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সম্পর্কের গতিশীলতায় পরিবর্তন আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরবসহ প্রতিপক্ষ দেশগুলো ইরানকে মোকাবিলা করতে এই সুযোগে নিজেদের নিরাপত্তা সম্পর্ক আরও গভীর করার কথা ভাবতে পারে।
উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ইসরাইলের সঙ্গেও ভারতের শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। হামাসের আক্রমণের পর নয়া দিল্লি সমর্থন দিয়েছে ইসরাইলকে। এ জন্য নয়া দিল্লির প্রশংসা করেছে তেল আবিব। এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসির মৃত্যুতে সমীকরণ কোনদিকে মোড় নেয় তাই দেখার বিষয়।