প্রচণ্ড তাপদাহে জেগে উঠলো ৩০০ বছরের পুরোনো শহর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মে ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে, সেসবের একটি হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইন। ফিলিপাইনে এখন গরম ও শুষ্ক মৌসুম চলছে। প্রশান্ত মহাসাগরের পানি অস্বাভাবিক রকমের উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রভাবে সেখানে গরমের তীব্রতা বেড়েছে। এতে জলাধারের পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। ফিলিপাইনের প্রায় অর্ধেক জায়গায় এখন খরা চলছে। কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে অর্থাৎ ১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছেছে।
এই তীব্র ক্ষরার কারণে ফিলিপাইনে পানিতে তলিয়ে যাওয়া একটি শহরের ধ্বংসাবশেষ নতুন করে দৃশ্যমান হয়েছে। শহরটির অবস্থান রাজধানী ম্যানিলা থেকে প্রায় ২০২ কিলোমিটার উত্তরে। প্রচণ্ড গরমে বড় একটি বাঁধের পানি আংশিক শুকিয়ে যাওয়ার পর শহরটি জেগে উঠেছে।ফিলিপাইনের পান্তাবাঙ্গান নামের ওই শহরটি ৩০০ বছরের পুরনো। ১৯৭০-এর দশকে পানি সংরক্ষণের জন্য কৃত্রিম জলাধার তৈরির সময় এটি পানিতে তলিয়ে যায়।
আবহাওয়া যখন অনেক শুষ্ক ও গরম থাকে, তখন বাঁধের পানি শুকিয়ে শহরটি কখনো কখনো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, যা বিরল ঘটনা। কিন্তু, ফিলিপাইনের বাঁধগুলো দেখভালকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রকৌশলী মারলন পালাদিন বলেন, তলিয়ে যাওয়া শহরটি আগে দৃশ্যমান হলেও এবারের মতো এতটা দৃশ্যমান হয়নি।
ফিলিপাইনের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সত্তরের দশকে নির্মিত জলাধারটির পানির স্বাভাবিক উচ্চতা ২২১ মিটার। তবে এখন পানির স্তর প্রায় ৫০ মিটার নেমে গেছে।
প্রচণ্ড গরমের কারণে লাখ লাখ মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল। চাকরিজীবীদের কর্মস্থলে না গিয়ে বাড়ি থেকে যুক্ত হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া বিষয়ক কর্তৃপক্ষ পাগাসার আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা আভাস দিয়েছেন, সামনের দিনগুলোয় গরম আরও বাড়তে পারে।
বর্ষাকালে সেখানে শক্তিশালী ঝড়ও আঘাত হানে। ২০১৩ সালে ফিলিপাইনে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ান আঘাত হেনেছিল, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি।
ফিলিপাইনের বাঁধ দেখভালকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রকৌশলী মারলন পালাদিন এএফপিকে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় গত মার্চ মাস থেকেই ডুবে থাকার শহরটির ধ্বংসাবশেষ দৃশ্যমান হতে শুরু করে। শহরটি নতুন করে জেগে ওঠায় পর্যটকেরা তা দেখতে যাচ্ছেন।
এদিকে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশটিতে শুধু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৩০ জন হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। অথচ ২০২৩ সালে এক বছরে সেখানে ৩৭ জন হিটস্ট্রোকে মারা যান। মিয়ানমারেও তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।