কমলার ছেড়ে যাওয়া বাড়িতে আসছেন আরেক ভারতীয়!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত বাসভবনটি খুব শিগগিরই নতুন বাসিন্দা পেতে চলেছে। ভারতের প্রভাবশালী বংশোদ্ভূত, নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ও তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী ঊষা চিলুকুরি ভান্স এই বাসভবনে উঠবেন। হ্যারিস গত চার বছর ধরে যেখানে বাস করছিলেন, সেই "নাম্বার ওয়ান অবজারভেটরি সার্কল"-এর বাসভবনটি খুব শিগগিরই পাড়ি দেবে নতুন এই দম্পতির কাছে।
ঊষা চিলুকুরি ভান্স: শিকড় অন্ধ্রপ্রদেশে, বেড়ে ওঠা সান দিয়েগোতে
১৯৮৬ সালে জন্ম নেওয়া ঊষা চিলুকুরি ভান্সের পিতৃসূত্রে ভারতীয় ঐতিহ্য রয়েছে। তার বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। যদিও ঊষার জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা সবই আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো শহরে, তার পিতার জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশের একটি ছোট গ্রামে। ঊষা নিজে কখনও ভারতে যাননি, তবে তার শিকড় অন্ধ্রপ্রদেশের এই গ্রামেই রয়েছে।
ঊষা অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত; তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ইয়েল ল স্কুলে যোগ দেন, যেখানে তার জীবন সঙ্গী জেডি ভান্সের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
এক সম্মিলিত জীবনযাত্রা: প্রেম, বিয়ে এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন
ভান্সের সঙ্গে ঊষার আলাপ অনেকটাই এক দুর্ঘটনাবশত হয়ে ওঠে। দু’জনেই এক ভিন্ন মেরু থেকে আসা হলেও, তাদের সম্পর্ক খুব দ্রুত গড়ে ওঠে। ২০১৪ সালে হিন্দু রীতিতে তাদের বিয়ে হয় এবং তাদের একটি আদর্শ পরিবার গড়ে ওঠে। দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে—ইওয়ান, বিবেক এবং মিরাবেল।
ঊষা ডেমোক্র্যাটিক শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বামপন্থী ও উদারপন্থী সংগঠনগুলির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু ভান্সের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর তার রাজনৈতিক অবস্থানেও পরিবর্তন আসে এবং ২০১৮ সালে তিনি রিপাবলিকান পার্টির সদস্যপদ নেন।
জেডি ভান্স: সংগ্রামের জীবন থেকে সিনেটর
জেডি ভান্সের জীবন অনেকটাই সংগ্রামী। ১৯৮৪ সালে ওহায়োর মিডলটাউন শহরে জন্মগ্রহণ করা ভান্সের ছোটবেলা ছিল অত্যন্ত কঠিন। পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট ছিল, এবং তার মায়ের মাদকাসক্তি ছিল এক কঠিন সমস্যা। একসময় তার বাবা তাকে ছেড়ে চলে যান এবং তিনি দাদা-দাদির কাছে বড় হন।
ভান্সের পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার ছিল বেশ বিচিত্র। প্রথমে তিনি মুদির দোকানে কাজ করতেন, পরে তিনি আমেরিকার নৌসেনায় যোগ দেন এবং ইরাকে মোতায়েন হন। পরবর্তীতে তিনি ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইয়েল ল স্কুলে পড়াশোনা করেন।
ভান্স একটি সিলিকন ভ্যালি ভিত্তিক বিনিয়োগকারী হিসাবেও কাজ করেছেন এবং তার আত্মজীবনী "হিলবিলি এলিজি" একটি সেরা বিক্রি হওয়া বইয়ে পরিণত হয়, যা অবলম্বনে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে। ২০২২ সালে তিনি ওহায়ো সিনেটর নির্বাচিত হন এবং সে সময় ঊষা তার নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।