লিভারপুলের জয়ের দিনে বিবর্ণ সিটি-রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
উয়েফা চ্যম্পিয়ন্স লিগে গতকাল লেভারকুসেনের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে লিভারপুল। অলরেডদের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন লুইস দিয়াজ। এছাড়া একটি গোল পেয়েছেন ডাচ ফরোয়ার্ড কোডি হাকপো। লিগের আরেক ম্যাচে স্টার্ম গ্রাজের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে গত আসরের রানার্সআপ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। এদিকে ঘরের মাঠে এসি মিলানের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরেছে পনেরোবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। লিগের অপর এক ম্যাচে স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে ৪-১ গোলে হেরেছে ম্যানসিটি। এদিকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতকাল শিরোপাধারী আল আইনের বিপক্ষে ৫-১ গোলের বিশাল জয় পেয়েছে রোনালদোর ক্লাব আল নাসর। গতকাল একটি গোল পেয়েছেন রোনালদো।
অ্যানফিল্ডে গতকাল ৪-০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। যেখানে হ্যাটট্রিক করেছেন লুইস দিয়াজ। অন্য গোলটি করেছেন কোডি হাকপো। গতকাল বল দখলে এগিয়ে ছিল জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। তবে সুযোগ তৈরি, গোলের জন্য শট ও লক্ষ্যে রাখার মতো ব্যাপারগুলোয় অনেক বেশি আধিপত্য ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ দলটির। শেষটা একপেশে হলেও শুরুতে ছিল লড়াইয়ের আভাস। গতিময় ফুটবল খেলা চলে ‘বক্স টু বক্স।’ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বেশ উত্তাপ ছড়ালেও গোলের তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউ। চতুর্দশ মিনিটে প্রথম কোনো দল শট লক্ষ্যে রাখতে পারে। গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে লিভারপুলকে হতাশ করেন কার্টিস জোন্স। দুই মিনিট পর একই অভিজ্ঞতা হয় লেভারকুসেনের এডমুন্ড টাপসোবার। ৪৪তম মিনিটে লিভারপুলের জালে বল পাঠান জেরেমি ফ্রিমপং। তবে এই ডাচ ডিফেন্ডারের হ্যান্ডবলের জন্য মেলেনি গোল। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ডেডলক ভাঙার দারুণ সুযোগ পান হাকপো। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গা থেকেও গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি। প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে খেই হারানোর ধারা বজায় থাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও। সে সময়ে দুই গোলরক্ষকের কারোরই খুব একটা পরীক্ষায় পড়তে হয়নি।
৫৮তম মিনিটে সুযোগ এসেছিল মোহাম্মদ সালাহর সামনে। তবে দুরূহ কোণ থেকে শট লক্ষ্য রাখতে পারেননি তিনি। অবশেষে ৬১তম চমৎকার চিপে লিভারপুলকে এগিয়ে নেন দিয়াজ। জোন্সের দারুণ থ্রæ পাসে প্রথম স্পর্শে আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠান কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড। এরপরই পাল্টে যায় খেলার চিত্র। এলোমেলো হয়ে যায় গত আসরে চমক জাগানো ফুটবল উপহার দেয়া লেভারকুসেন। রক্ষণের ব্যর্থতায় হজম করে আরো তিন গোল। ৬৩তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিভারপুল। সালাহর নিখুঁত ক্রসে দূরের পোস্টে ডাইভিং হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন অরক্ষিত হাকপো। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের। শুরুতে অফসাইডের ইশারা দেন লাইন্সম্যান। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ভিক্টর বোনিফেইস। কর্নারের পর আলেক্স গ্রিমালেদার ক্রসে খুব কাছে থেকেও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
৭২তম মিনিটে আলেক্সিস মাক আলিস্তেরের শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি লেভারকুসেন গোলরক্ষক। ৮৩তম মিনিটে স্কোর লাইন ৩-০ করে ফেলেন দিয়াজ। সালাহর ক্রস দূরের পোস্টে প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে জাল খুঁজে নেন তিনি। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন দিয়াজ। ডারউইন নুনেজের শট রুখে দিলে পেয়ে যান কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড। বাকিটা অনায়াসেই সারেন তিনি। টানা চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় আছে লিভারপুল। টানা দুই জয়ে আসর শুরুর পর একটি করে ড্র ও হারে বেশ পিছিয়ে পড়েছে লেভারকুসেন। ৭ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত ১১ নম্বরে আছে তারা।
এদিকে লা লিগায় ‘এল ক্লাসিকো’য় বার্সেলোনার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্যালন ডি’অর বিপর্যয়। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য রিয়াল মাদ্রিদের প্রয়োজন ছিল দুর্দান্ত একটি জয়। গতকাল ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এসি মিলানের বিপক্ষে তেমন একটি জয়ের খোঁজেই মাঠে নেমেছিল রিয়াল।
কিন্তু খারাপ সময়কে মোটেই জবাব দিতে পারেনি মাদ্রিদের ক্লাবটি। উল্টো মিলানের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে তারা। ঘরের মাঠে রিয়ালের টানা দুই হার। চলতি মৌসুমে এটি রিয়ালের তৃতীয় হার। অথচ গত মৌসুমে সব মিলিয়ে মাত্র দুই ম্যাচ হেরেছিল ক্লাবটি। এদিন ম্যাচের শুরুতেই ভ্যালেন্সিয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশে শোক প্রকাশ করা হয়। আর খেলা শুরু হতেই আক্রমণকে পাখির চোখ করে রিয়াল। ম্যাচের শুরুতেই পরপর দুটি সুযোগও তৈরি করে রিয়াল। যদিও অল্পের জন্য গোল দুটি মিস করেন এমবাপ্পে। রিয়ালের আক্রমণের বিপরীতে মিলানকে এ সময় প্রতি-আক্রমণের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছিল। যদিও শুরুতে সে সুযোগও খুব বেশি মিলছিল না।