×

বিশেষ সংখ্যা

রেজাউল করিম খোকন

নতুন স্বপ্ন, নতুন অঙ্গীকার

Icon

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নতুন স্বপ্ন, নতুন অঙ্গীকার
   

অনেক নাটকীয়তা, অনেক উত্থান-পতন, পটপরিবর্তনের বছর হিসেবে ২০২৪ সাল বিদায় নিয়েছে। নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা আর যুগান্তকারী পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে নতুন বছর ২০২৫। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে পারেনি। বঞ্চনা, নিপীড়ন, বৈষম্য, অনিয়ম, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার বেড়াজালে আজও বন্দি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে আমরা ১৯৭১-এ বিজয় অর্জনের পর যাত্রা শুরু করেছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশে। কিন্তু এই ২০২৫-এর শুরুতে এসে আমাদের সবার মনে প্রশ্ন, এখনো কি আমরা যথার্থভাবে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি? বিদায়ী ২০২৪ সালে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বড় ভিলেন ছিল নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার যেমন দাম কমাতে পারেনি, তেমনি অন্তর্র্বর্তী সরকারও তাদের চার মাসের চেষ্টায় তেমন একটা সফল হয়নি। ফলে বছরজুড়ে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ বাজারে গিয়ে দামের চাপে পিষ্ট হয়েছেন। মধ্যবিত্তের জীবনও কঠিন ও রূঢ় হয়ে গেছে। তাদের পাত থেকে খাবারের কিছু পদ কমেছে। নিত্যপণ্যের দাম পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুপারশপগুলো মধ্যবিত্ত গ্রাহক ধরে রাখতে ব্যবসায়িক কৌশল পাল্টেছে। মিনি প্যাক শ্যাম্পুর মতো গরুর মাংস, মাছ, মুরগি, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের কম্বো প্যাকেজ নিয়ে এসেছে, যা দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ ক্রেতাদের অসহায় আত্মসমর্পণের বার্তা দেয়। সরকার পরিবর্তন, তীব্র তাপপ্রবাহ, একাধিক বন্যা, পণ্য সরবরাহে ঘাটতি, আমদানি ও জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে বছরজুড়ে দেশে নিত্যপণ্যের বাজার অনেকটাই অস্থিতিশীল ছিল। বিশেষ করে ফার্মের মুরগি ও ডিম, আলু, পেঁয়াজ, চাল, সয়াবিন তেল এবং বিভিন্ন সবজির বাড়তি দামে ভোগান্তিতে ছিলেন নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ। মুদ্রানীতিতে সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে সাফল্য পাওয়া যায়নি। মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি ও বাজার তদারকি-এই তিনটির সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সাহায্যনির্ভর অর্থনীতিটি পরিণত হয়েছে বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতিতে। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। গত পাঁচ দশকে অতিদারিদ্র্যের হার প্রায় এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে এনেছে। সব মিলিয়ে উন্নয়ন সহযোগীরা এখন বাংলাদেশকে রীতিমতো ‘উন্নয়নের গল্প’ হিসেবে দেখে। অথচ পশ্চিমারা একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি মনে করত। সেই দিন আর নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিদারিদ্র্য, বিশাল জনগোষ্ঠী, দুর্বল অবকাঠামো, কৃষিজমির সীমাবদ্ধতা- এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় ও দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য দেখিয়েছে। এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা ও বিদেশি সরকার নীতি ও ঋণসহায়তা দিয়েছে। ফলে নানা সমস্যা কাটিয়ে বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাওয়া ত্বরান্বিত হয়েছে। ফলে জনগণের মাথাপিছু জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) বেড়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা অপরিসীম। কৃষকরা দেশকে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পন্ন করে ফেলেছেন। বেসরকারি খাতের নেতৃত্বে অর্থনীতি বাজারনির্ভর হয়ে উঠেছে। শুরুর দিকে বিদ্যুৎ, কৃষি, বিমান সংস্থা, খাদ্য, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান- সবই ছিল সরকারি মালিকানায়। এখন এসব খাতের নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসরকারি খাত। তবে আগামীর কঠিন পথ পাড়ি দিতে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।

সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে, মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলার। তাতে দেখা যায়, গত ৫০ বছরে এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। তবে এক হাজার ডলার পেরোতে স্বাধীনতার পর ৪০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৫৪ ডলার হয়। পরের ১১ বছরের মধ্যেই তা দেড় গুণ বৃদ্ধি পায়। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ছিল ৪ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ দশকে দেশের জিডিপির আকার বেড়েছে ১ হাজার ১৭৫ গুণ। চলতি বাজারমূল্যের হিসাবে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। স্বাধীনতার পরপর বাংলাদেশকে ‘বাস্কেট কেস’ বা তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। ধারণাটি এমন ছিল, এখানে যতই সাহায্য করা হবে, তা পড়ে যাবে। তাই বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না। দাতাদের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়েই চলতে হবে। বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমে বর্তমানে জিডিপির ২ শতাংশে নেমে এসেছে। একসময় বাংলাদেশকে কত সহায়তা দেয়া হবে, তা ঠিক করতে দাতারা বছরে একবার বৈঠক করত, যা প্যারিস কনসোর্টিয়াম নামে পরিচিত ছিল। গত পাঁচ দশকে দারিদ্র্যের হার ৮৯ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে ১১ শতাংশে নেমেছে। মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, টিকাদান কর্মসূচি, গড় আয়ু, মাথাপিছু আয়- প্রায় সব সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ বেশ এগিয়েছে।

ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। সংস্কার বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন। এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে হবে। জানুয়ারি মাসে সংস্কারের জন্য গঠিত ১৫টি কমিশনের প্রতিবেদন জমা হবে বলে আশা করা যায়। প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী সুপারিশ করবেন, তা আমাদের জানা নেই। সব কমিশন বহু সুপারিশ তুলে ধরবে, আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে হবে। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না। ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সব ধরনের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের পথে ফেরাবার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি আমরা। জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নকে সাহসী করে তুলেছে, বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ আবার ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে। ঐক্যই মূল শক্তি, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের ঐতিহাসিক মাত্রায় বলীয়ান করেছে। গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরো শক্তিশালী হয়েছে। ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যেটা সব নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়- আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সব অধিকার প্রদান করতে বাধ্য। রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার অন্য কোনো পরিচয় দেয়ার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এই সুযোগ যদি আমরা গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক হই, কিংবা অপারগ হই; তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের কোনো প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।

গত ৫০ বছরে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, মাফিয়ারা রাজনীতিকে গ্রাস করেছে, আজকে পরিচ্ছন্ন তরুণ নেতৃত্ব বের করে আনতে হবে। এই যে রাষ্ট্র সংস্কার, এগুলো জনগণ মানবে না, যদি আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি। বেকারত্ব মোচনে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না করতে পারি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক করতে না পারি। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত এ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পারছে না। তারপরও আমরা আরো কিছুদিন ধৈর্য ধরতে চাই। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার ‘বিশ্বের ১ নম্বর দেশ’ হিসেবে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু সেসবের প্রায় সবই দুর্নীতি বা দুর্যোগের জন্য। এবার ব্রিটিশ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্টের বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে প্রোগ্রেস বা অগ্রগতির জন্য। আসুন আমরা একবার বুকভরে শ্বাস নিই এবং গর্বের সঙ্গে বলি, বাংলাদেশ। প্রতি বছরের মতো গত বছরও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। তারাই ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচিত করেছে। এ বছরের স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও নতুন দিকে দেশের যাত্রা শুরু করার বিষয়টিই বাংলাদেশকে তালিকার শীর্ষে নিয়ে এসেছে। আমরা মনে করি, অন্তর্র্বর্তী সরকারকে ২০২৫ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে। কবে নির্বাচন হবে তা-ও নির্ধারণ করতে হবে। আদালতগুলোর নিরপেক্ষভাবে কাজ করা ও বিরোধী দলগুলোর সংগঠিত হওয়ার সময় পাওয়ার বিষয় প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনোটি সহজ হবে না। ফ্যাসিবাদকে হটানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এখন এই স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে এ দেশের মানুষ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কর্তব্য। যে কোনো ধরনের চরমপন্থা স্বাধীনতার অর্জনকে ভুলপথে নিতে পারে। এছাড়া টেকসই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রমে গতিশীলতা আবশ্যক। যাতে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখা যায়। একই সঙ্গে এটা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট শাসক ফিরে আসতে না পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App