মোসা. সাবরিনা আহমেদ
শীত, আমায় তুমি কোথায় নিয়ে এলে!

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হেমন্তের বিদায়ী শানাই বাজতে না বাজতেই প্রতাপশালী শীত এসে এক দুষ্টুমিষ্টি হাসি দিয়ে প্রকৃতিকে তার আগমনী ঘোষণা দেয়। শীতের রুদ্র মনোরম রূপের ঝলক দেখে নিউরন সেল ট্রিগারের মতো কাজ করে অতীত স্মৃতিগুলো জীবন্ত করে তোলে। বিশ্বের দ্রুতগামী যানের চেয়েও দ্রুতগতিতে মন টাইম ট্রাভেল করে চলে যায় একশো তেইশ মাইল উত্তর-পশ্চিমের শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত সেই শহরটিতে। যেখানে আমার জন্ম, আমার বেড়ে ওঠা। চুম্বক যেমন লোহাকে আকর্ষণ করে, লেপও তেমনি আমাকে আকৃষ্ট করে রাখত। সকালবেলা অতি কষ্টে এই আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে আম্মুর হাতের সুস্বাদু কালাই রুটি, চা আর চাল ভাজা খেয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে যে-ই না পা বাড়াতাম, অমনি পেছন থেকে আম্মু মাংকি টুপিটা দিয়ে পুরো মুণ্ডু ঢেকে দিত। কী যে যন্ত্রণা! স্কুলে এই মাংকি টুপি দেখে বান্ধবীরা যখন হাসাহাসি করত, তখন আমিও আমার শক্তিশালী অস্ত্রটা প্রয়োগ করতাম। ঠাণ্ডা হাত ওদের গালে দিয়ে হাসির বদলা নিয়ে নিতাম। দুপুরে রোদ উঠলে গোসল করে ছাদে দৌড় দেয়া আর সন্ধ্যেবেলা ছাদে গিয়ে চুলার আঁচ পোহাতে পোহাতে পিঠা খাওয়ার মতো উপভোগ্য মুহূর্ত শীতকাল ছাড়া পাওয়া যায় না। আর মাঝের বিকেলটা ব্যাডমিন্টন খেলতে খেলতে কখন যে পার হয়ে যেত টেরই পেতাম না! তেমনিভাবে টের পেলাম না কীভাবে এতগুলো শীত জীবন থেকে চলে গেল; কিন্তু সে ঠিকই গভীরভাবে ছাপ এঁকে দিয়ে গেল মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরন সেলে।
য় শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়