×

শেষের পাতা

নারীমুক্তির সংগ্রামে এখনো প্রাসঙ্গিক বেগম রোকেয়া

Icon

সেবিকা দেবনাথ

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নারীমুক্তির সংগ্রামে এখনো প্রাসঙ্গিক বেগম রোকেয়া
   

বেগম রোকেয়া প্রতিকূল সমাজের অসীম সাহসের অনন্য এক দৃষ্টান্ত। ঊনবিংশ শতাব্দীতে তিনি আলোর মশাল হাতে নিয়ে উপস্থিত হন। সেই আলোয় পথ চলে নারী সমাজ এগিয়েছে অনেকটা। তবুও কোথায় যেন বাঁধা নারীর জীবন। নারী মুক্তির ক্ষেত্রে এই একবিংশ শতাব্দীতেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক বেগম রোকেয়া। অনেক সময় সেই প্রাসঙ্গিকতা যেনো আরো বেশি গুরুত্ব বহন করে বলে মনে করেন মানবাধিকার ও নারী নেত্রীরা।

তারা বলছেন, বেগম রোকেয়াকে অনেকে নারীবাদী বলে আখ্যায়িত করেন। কিন্তু তিনি পশ্চিমা নারীবাদের পথে হাঁটেননি। তিনি নিজের সমাজ ও সংস্কৃতির মধ্যে থেকেই মুক্তির কথা বলতেন। তিনি ধর্মপ্রাণ ছিলেন; কিন্তু ধর্ম বিশ্বাস তার মুক্তচিন্তার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তবুও বিভিন্ন সময় বেগম রোকেয়ার বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে; আক্রমণ করা হয়েছে। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ধর্মীয় উগ্রবাদী একটি গোষ্ঠী নারীকে পেছনে টেনে ধরার প্রয়াসে নারীর পোশাক, তারা চলাচল, অধিকার খর্ব করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা উত্তোরণে পথ দেখায় বেগম রোকেয়ার সাহস, আদর্শ।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বেগম রোকেয়া শুধু একজন নারীবাদী ছিলেন না। তিনি নারীবাদের ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি শুধু নারীদের কথা বলেননি; মানব সমাজের উন্নয়নে যা যা করণীয়, সেসব কথাও বলেছেন। তার কাজগুলোকে আমরা যদিও সমাজ সংস্কারমূলক কাজ হিসেবে দেখি, কিন্তু সেই সমাজ-সংস্কারটা শুধু সমাজ-সংস্কার ছিল না; সমাজের মধ্যে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার কথাই তিনি ভেবেছিলেন। সভ্যতার অগ্রসরে সমাজের যে সংকট, সে কথাও তিনি বলে গেছেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে নানা সময়ে নানাভাবে ধর্মের কল্যাণকর দিক বাদ দিয়ে ধর্মের অপব্যবহার করে নারীকে কীভাবে অবরুদ্ধ করা যায়, তাকে অধীনস্থ করা যায়, তার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালানো যায়, সেই জায়গায় পৌঁছেছি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেরও

একইভাবে সা¤প্রদায়িকতা বাড়ছে। এসব সাম্প্রদায়িক এজেন্ডার ভেতর নারীরাও পড়ে যাচ্ছে। সমাজ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে সংকট সেই সংকট কাটাতে বেগম রোকেয়ার দর্শন এখনো প্রাসঙ্গিক।

মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীর বলেন, নারী অধিকার নিয়ে বেগম রোকেয়া যেসব কথা বলেছেন এখনো তার গুরুত্ব আছে। এখনো আমরা নারীর শিক্ষা নিয়ে কথা বলছি। ধর্মীয় কুসংস্কারের বিষয়ে কথা বলছি। যে বিষয়গুলো নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে সেগুলো নিয়েও আমাদের কথা বলতে হচ্ছে। এখনো ঘরে-বাইরে নারী নির্যাতন চলছে। নারী-পুরুষের এখনো সমান অধিকার হয়নি। এ কারণে বেগম রোকেয়া প্রাসঙ্গিক। আরো অনেক বছর রোকেয়া আমাদের উৎসাহ উদ্দীপনার উৎস হয়ে থাকবেন।

সম্প্রতি এক বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেছেন, শুধু নারী সমাজের জন্য নয়, বরং নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা ও ভাবনা ছিল বেগম রোকেয়ার মধ্যে। তার জন্মের এত বছর পর আজকের সমাজ, নারী সমাজ এবং রাষ্ট্র তার ভাবনাকে গ্রহণ করেছে এবং বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে- এমনটি বলা যায়। আজকের বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মসূচি তথা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৫ নম্বর লক্ষ্যমাত্রা জেন্ডার সমতা অর্জন এবং নারীর ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে রোকেয়ার স্বপ্নের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবায়দা নাসরীনের মতে, বেগম রোকেয়া কেবল একজন ব্যক্তি নন। তিনি একটি প্রতীক।

তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া সুস্পষ্টভাবে বুঝেছিলেন, সমাজের বিধি-ব্যবস্থা নারী-পুরুষের স্বার্থকে বিপরীতমুখী করে রাখে। তাই এ সমাজের নারীমুক্তির প্রশ্নকেও স্বদেশের উপযোগী করেই আলোচনা করেছেন। সমাধান খুঁজেছেন নিজ মাটিতে। আমরা যদি একটি নারী বান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, নারীকে তার প্রাপ্য অধিকারের জায়গায় দেখতে চাই তাহলে বেগম রোকেয়াকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App