পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
এক হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের লাল তালিকা করেছে সরকার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশে উদ্ভিদ প্রজাতির সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এক হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের একটি লাল তালিকা তৈরি করেছে সরকার। এই তালিকা তৈরির মাধ্যমে আমরা উদ্ভিদের বিপদগ্রস্ত প্রজাতির সঠিক মূল্যায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। তালিকায় ২৭১ প্রজাতি ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত, ২৫৬ প্রজাতির তথ্য অপ্রতুল, ৩৯৫ প্রজাতি বিপদাপন্ন, যার মধ্যে পাঁচটি মহাবিপন্ন, ১২৭টি বিপন্ন এবং ২৬৩টি সংকটাপন্ন। এছাড়া ৭০টি প্রজাতিকে প্রায় বিপদগ্রস্ত এবং সাতটি আঞ্চলিকভাবে বিলুপ্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বাংলাদেশে উদ্ভিদের লাল তালিকা বই’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই উদ্যোগ উদ্ভিদ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে সহায়ক হবে এবং সরকারের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া ৩ হাজার ৮১৩ উদ্ভিদ প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলোর ভবিষ্যৎ মূল্যায়ন জরুরি। এই তালিকা নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজ করবে। এটি পরিবেশগত স্থিতিশীলতা অর্জনে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখবে। উপদেষ্টা বলেন, উদ্ভিদ রেড লিস্ট সংরক্ষণবিদদের জন্য অপরিহার্য তথ্য ভাণ্ডার হবে, যা সংরক্ষণ প্রচেষ্টা ও সম্পদের কার্যকর বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।
আরো পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ মাস পূর্তি : বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উল্লেখযোগ্য অর্জন
তিনি আরো বলেন, আগ্রাসি উদ্ভিদ প্রজাতির প্রভাব কমাতে সরকার ৫টি নির্বাচিত সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিশেষ ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়ন করেছে। গবেষণায় বাংলাদেশে ১৭টি আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ প্রজাতি চিহ্নিত করা হয়েছে, যেমন- কচুরিপানা ও আসাম লতা। এগুলো পরিবেশে বিপর্যয় ডেকে আনছে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই কৌশলগুলোর মধ্যে আক্রমণাত্মক প্রজাতির ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিকীকরণ রোধ এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রয়োগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই উদ্যোগগুলো বন ও বনসম্পদ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএসএম হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এনভায়রনমেন্টাল স্পেশালিস্ট ইশতিয়াক সোবহান, আইই সিএনএর প্রতিনিধি সরওয়ার আলম প্রমুখ।
এদিকে কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৭শ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে সরকার। পরিবেশ উপদেষ্টার অনুরোধের পরিপ্র্রেক্ষিতে বনভূমির এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর এই চিঠি পাঠানো হয়।