×

শেষের পাতা

জরায়ু ক্যান্সাররোধে ক্যাম্পেইন শুরু

৬২ লাখের বেশি কিশোরী পাবে এইচপিভি টিকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

৬২ লাখের বেশি কিশোরী পাবে এইচপিভি টিকা

   

জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ৬২ লাখের বেশি কিশোরীকে টিকা দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, সিলেট এবং রংপুর বিভাগে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। এই কার্যক্রম মাসব্যাপী চলবে।

দ্য ভ্যাকসিন এলায়েন্স (গ্যাভি), ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) সহায়তায় ১০-১৪ বছর বয়সি ৬২ লাখেরও বেশি কিশোরীর জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এই টিকা দেয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং নির্ধারিত টিকাদানকেন্দ্রে বিনামূল্যে এই টিকা পাওয়া যাবে, তবে আগে থেকেই

ভ্যাস্কইপিআই অ্যাপ ডাউনলোডের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। সরকারি ছুটির দিন বাদে সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নিয়মিত এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। তবে কেবল টিকাদানের মাধ্যমে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এই টিকা হচ্ছে সবচেয়ে সাশ্রয়ী একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই টিকা নেয়া মেয়েদের প্রায় ৯০ শতাংশের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে গেছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার বাংলাদেশের মেয়েদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর কারণ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকা বিভাগের ১৫ লাখেরও বেশি মেয়েকে এইচপিভি টিকা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে এই ক্যাম্পেইনের প্রথম পর্যায় সফলভাবে সম্পন্ন করে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা বাদে দেশের ৭ বিভাগে এই কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়েছে এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি মেয়েরা এই টিকা পাবে। এইচপিভি টিকার একটি মাত্র ডোজ জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে, মেয়েদের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে এবং একটি সুস্থ জাতি গঠনে সাহায্য করবে।

গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের চিফ কান্ট্রি ডেলিভারি অফিসার থাবানি মাফোসা বলেন, টিকা দেয়ার আজকের এই কার্যক্রমের অর্থ হলো আগামী বছরগুলোতে আরো লক্ষাধিক মেয়েকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে সুরক্ষিত করা হলো। তিনি আরো বলেন, মেয়েদের সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য জীবনরক্ষাকারী এই টিকা গ্রহণের সুযোগ আরো স¤প্রসারণ করতে বাংলাদেশ সরকারের অংশীজন হয়ে একযোগে কাজ করবে গ্যাভি।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ (ওআইসি) এমা ব্রিগহাম বলেন, ঢাকা বিভাগে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের প্রথম পর্যায় সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের স¤প্রসারিত টিকাদান (ইপিআই) কর্মসূচিকে অভিনন্দন জানাই। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে, অনানুষ্ঠানিক ও ধর্মীয় বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অথবা রাস্তায় বসবাসকারী কোনো মেয়েই যেন এই টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে সে বিষয়টি মাথায় রেখে এখন টিকা দেয়ার সময় এসেছে। জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে প্রতিটি মেয়েকে সুরক্ষিত করতে এইচপিভি ক্যাম্পেইনের সামগ্রিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন, এইচপিভি ভ্যাকসিন সরবরাহ, কোল্ড চেইন ব্যবস্থাপনা, ‘ভ্যাক্সইপিআই’ অ্যাপের ব্যবস্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ কৌশল তৈরি এবং সর্বাধিকসংখ্যক জনসাধারণের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে ইউনিসেফ প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।

বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. বর্ধন জংরানা বলেন, টিকা জীবন বাঁচায়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি একটি জীবন রক্ষাকারী পদক্ষেপ। এটি জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে কমিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে সক্ষম। এই প্রচেষ্টায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের নারীদের সুরক্ষিত রাখার এবং স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যত গঠনের পথ প্রশস্ত করার ক্ষমতা রাখি। তিনি বলেন, এই টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (কওমি মাদ্রাসা) ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে আরো নারী শিক্ষকদের সম্পৃক্ত এবং কমিউনিটি পর্যায়ে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী মাসে ক্যাম্পেইনটি শেষ হওয়ার পর থেকে এইচপিভি টিকা পঞ্চম শ্রেণির মেয়েদের এবং শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে এমন ১০ বছর বয়সি মেয়েদের জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০২৫ সালের শেষ নাগাদ, গ্যাভির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আট কোটি ৬০ লাখ মেয়েকে টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনার ক্ষেত্রে চলমান কর্মসূচিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App