×

প্রথম পাতা

সিডিআর সিসিটিভি ফুটেজ ও ফেসবুক দেখে আসামি চূড়ান্ত

Icon

কামরুজ্জামান খান

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিডিআর সিসিটিভি ফুটেজ ও ফেসবুক দেখে আসামি চূড়ান্ত

ছবি: সংগৃহীত

   

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা অনেক মামলা নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনার মধ্যে চলছে তদন্ত কাজ। গণমামলায় গণআসামি- এমন অভিযোগ রয়েছে শুরু থেকেই। আছে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগও। গত জুলাই-আগস্টের সহিংস ঘটনায় সারাদেশের প্রায় ২৪শ মামলার মধ্যে পুলিশ ছাড়াও সিআইডি, পিবিআই ও ডিবি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে। তদন্ত সংশ্লিস্টদের একটি নির্দিষ্ট ফরমে উল্লেখ থাকা ৪৭টি তথ্য সংযুক্ত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা মামলায় উল্লিখিত আসামিদের ঘটনায় সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হতে সিডিআর এবং ওই সময়কার ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করছেন। এজাহারে উল্লিখিতদের ওই সময়কার ফেসবুক ঘেটেও তথ্য খুঁজছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় এক আদেশে একসঙ্গে ৭৫টি মামলা তদন্তের আদেশ পান তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে আরো কিছু মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে সিআইডি। দায়িত্ব পাওয়ার পর নির্ভুল প্রতিবেদন তৈরিতে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন তারা।

পিবিআইয়ের মুখপাত্র পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সুপার আবু ইউসুফ বলেছেন, জুলাই-আগস্টের হতাহতের ঘটনায় থানা এবং আদালতে (সিআর ও জিআর) দায়ের করা দুই শতাধিক মামলার তদন্ত করছে পিবিআই। এছাড়া, এ সময়ে রাজনৈতিক বিরোধের ঘটনায় আরো ৮০টি মামলা তদন্তের দায়িত্বও পেয়েছে সংস্থাটি। তদন্ত শুরু হয়েছে। সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমান দিয়ে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া হবে নিয়ম মেনে।

জানা গেছে, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে একাধিক নির্দেশনায় তদন্তের গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। এতে অনেক এলাকার মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করতে আদালতের অনুমতি চাইতে বলা হয়েছে। তবে সব ঘটনার এক্ষেত্রে এই নির্দেশনা প্রযোজ্য নয় বলে জানা গেছে। প্রায় ২৪শ মামলার তদন্ত কাজ পুরোদমে শুরু না হলেও হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশনায় তদন্তে গতি আসতে শুরু করেছে।

পুলিশের একাধিক পরিদর্শক জানিয়েছেন, গত জুলাই-আগস্টের সহিংস ঘটনায় এক ব্যক্তির নামে একাধিক থানায় মামলা হয়েছে। ওইসব ব্যক্তির ঘটনার দিনের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস রেকর্ড (সিডিআর) পর্যালোচনা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এতে সিডিআরে ঘটনাস্থলে উপস্থিতি পাওয়া সাপেক্ষে তার নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হবে। সিডিআরে তথ্য না মিললে চার্জশিট থেকে নাম বাদ যাবে। আর সিডিআরে ঘটনাস্থলে উপস্থিতি পাওয়ার তথ্য মিললে ওই মামলার চার্জশিটে নাম থাকবে। আর অন্য স্পটের ক্ষেত্রে নির্দেশদাতা বা হুকুমের আসামি হিসেবে চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত হবে। এর অর্থ হচ্ছে এক মামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই ব্যক্তির নামে রুজুকৃত মামলায় নির্দেশ বা হুকুমদাতা আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন চার্জশিটে। সিসিটিভি ফুটেজ, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও সিডিআরে তথ্য পাওয়া না গেলে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে মামলার প্রতিবেদন থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন কয়েক হাজার ব্যক্তি। যদিও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং শরীক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের ব্যাপারে ভিন্ন নির্দেশনা রয়েছে বলে একাধিক পরিদর্শক জানিয়েছেন। তখনকার উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য যেসব নেতা দায়ী বা যাদের মন্তব্য-বক্তব্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে তাদের নাম সব অভিযোগপত্রেই থাকবে বলে জানা গেছে।

পুলিশের এক আদেশে দেখা গেছে, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রতিবেদন হেডকোয়ার্টার্সে পাঠাতে ‘ছক-খ’ পূরণ করতে বলা হয়েছে। এই ফরমের এক নম্বরে ১৩টি, দুই নম্বরে ১৫টি, তিন নম্বরে ৫টি, চার নম্বরে ৪টি, পাঁচ নম্বরে ৫টি ও ছয় নম্বরে ৫টি তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলের বিবরণ, ভিকটিমের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি যদি থাকে, সুরতহাল রিপোর্ট, ময়না তদন্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদন, লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হলে বিবরণ, নিহতের দাফন সংক্রান্ত তথ্য, মৃতদেহ গোসল করানোর বিবরণ, মৃত্যুসনদ, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য ল্যাবে পাঠানো হলে বিবরণ, আহত-নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে কে বা কারা নিয়েছিল, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, সিডিআর, একই ঘটনায় অন্য কোনো মামলা হলে, আসামি গ্রেপ্তার রিমান্ডের তথ্য, জব্দকৃত আলামত, আসামিদের ফেসবুক এর তথ্য, বেওয়ারিশ মরদেহের বিবরণ,

বিচারকালে যেসব তথ্য উপস্থাপনসহ ৪৭টি তথ্য উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

ডিএমপির একাধিক থানার পরিদর্শক বলেছেন, মামলা তদন্তে একাধিক নির্দেশনা পাওয়া গেছে। সিনিয়র কর্মকর্তারা থানার অফিসার ইনচার্জদের ডেকে তদন্তে অগ্রগতির তথ্য জানতে চাচ্ছেন, দিচ্ছেন নির্দেশনা। প্রক্রিয়া অনুযায়ী মামলার তদন্তে যা যা করা দরকার তা করতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ঢাকার পাশে সাভার-আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ কয়েকটি এলাকায় হতাহতের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। এসব এলাকার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার পাশাপাশি আদালতেও কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক মামলার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আশুলিয়া থানায় মৃত উল্লেখ করে এক ব্যক্তির স্ত্রী মামলা করার পর ওই ব্যক্তি (আল-আমীন) নিজেই থানায় হাজির হয়ে মারা না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এমন আরো কয়েকটি ভুয়া ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ব্যক্তিগত ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে কয়েক হাজার ব্যক্তিকে মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগ পেয়েছে স্বরাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App