শরতে টানা বর্ষণে জনভোগান্তি চরমে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাবর্ষ পঞ্জিকায় আশ্বিনের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে, যা শরতের শেষ ভাগ। কিন্তু প্রকৃতিতে এখনো বিরাজ করছে বর্ষার চিত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীতে থেমে থেমে ঝরেছে বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে, কখনো ঝিরিঝিরি। একইভাবে প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে ঢাকার শ্রমজীবী মানুষের জীবনে এমন বৃষ্টি যেন অভিশাপের মতো। একইসঙ্গে অফিসগামী চাকরিজীবী কিংবা শিক্ষার্থীরাও পড়েন বিপাকে।
বৃষ্টিতে রাজধানীতে একদিকে যেমন গণপরিবহনের সংকট দেখা দেয়, অন্যদিকে প্রধান সড়কগুলোর কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয় যানজট। বৃষ্টির পানি আটকে অলি-গলিতেও যানজট লেগে যায়। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তাপপ্রবাহ কমলেও যানজট-জলাবদ্ধতা মিলে ঢাকার পথে পথে ভোগান্তি বাড়িয়েছে। বিরতিহীন বৃষ্টির মধ্যেই রাজপথে কর্মজীবী মানুষের ঢল দেখা গেছে। আর এই সুযোগে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া হাঁকাতে দেখা গেছে।
গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার। গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে তৈরি লঘুচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে দেশে বৃষ্টি ঝরছে। তবে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এর ফলে আজ শুক্রবার থেকে বৃষ্টি কমে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে আবার গরম পড়তে পারে বলেও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, তাপমাত্রা বাড়লে অস্বস্তিকর গরমের অনুভূতিও বাড়বে। তবে তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি থেকে ৩৫ ডিগ্রির বেশি হবে না। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, বৃষ্টি থাকবে না এমন নয়, তবে কাল (আজ) থেকে কমে আসবে। এরপর তাপমাত্রা বাড়তির দিকে যাবে। কিন্তু গত কয়েকদিন যেমন গরম ছিল, এমন গরম পড়বে না আশা করছি। অক্টোবরের ১/২ তারিখের দিকে আবার বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে। এছাড়া রাজশাহীতে ১০১, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ৯০, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮৭, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৮২, যশোরে ৭৭ ও কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৭৫ মিলিমিটারসহ সারাদেশে কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে অতিভারি বৃষ্টিপাত বলা হয়।