×

মুক্তচিন্তা

মিথ্যা মামলা দিয়ে জাতীয় পার্টির অবদান মুছে ফেলা যাবে না

Icon

খন্দকার দেলোয়ার জালালী

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ পিএম

মিথ্যা মামলা দিয়ে জাতীয় পার্টির অবদান মুছে ফেলা যাবে না

খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংবাদিক ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি

   

শুধু বিজয় নয়, মহাবিজয়। বিশ্ব ঐতিহ্যের মতই ইতিহাস সৃষ্টি করা বিজয়। এক মাস হলো ইতিহাস গড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের। চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ নিয়েছিলো স্বৈরাচার পতনে এক দফা আন্দোলনে। বিজয় হলো সেই এক দফা আন্দোলনেরও। পতন হলো জাতির বুকে জগদ্দল পাথর হয়ে বসে থাকা স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের। রক্ত পিপাষু শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে পালিয়ে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশে^র ইতিহাসেই এক অনন্য অভ্যুত্থান। বিশ্ব দেখেছে কিভাবে বাংলাদেশের ছাত্ররা গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দিচ্ছে। রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ যেভাবে গুলির সামনে বুক পেতে দাঁড়ালো, সাম্প্রতিক ইতিহাসে কোথায় এমন বীরত্ব ? মীর মুগ্ধ’র মুখ থেকে যেন স্বর্গীয় শীতল আহবান “কারো পানি লাগবে? পানি লাগবে?” এমন অসংখ্য ঘটনার জন্ম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। স্কুলের কিশোর-কিশোরীদের সাথে রাজ পথে নেমেছিল বাবা-মা। শিশুদের ঘরে রাখা সম্ভব হয়নি অভিভাবকদের পক্ষে। কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে জীবন দিয়েছে আমাদের স্কুল পড়ুয়া শিশুরাও। এতো তাজা রক্ত আর শতশত নিষ্পাপ শিশুদের জীবন দেয়া কখনোই বৃথা যেতে পারে না। হয়েছেও তাই। 

৫ আগস্ট। সকাল থেকেই রক্তের স্রোতে খড়কুটোর মতো ভেসে যাচ্ছিল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ প্রচেষ্টা। লাখো মানুষের ঢল যখন গণভবনের দিকে, তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করে। সাহায্য করে বিদেশে পালিয়ে যেতেও। বাংলাদেশ দেখেছে এক অনন্য বিজয়ের মহালগ্ন। 

৮ আগস্ট সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন বাঙালীর অহংকারের ধন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। খ্যাতিমান ও বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন। বিশ^ নন্দিত ড. ইউনূস এর নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা। প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে সকল দলই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে সম্মত হয়েছে।

এখনও রক্তের দাগ মুছে যায়নি। এখনো গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে সন্তানহারা মা। হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে এখনো পাঞ্জা লড়ছে আমাদের বীর সন্তানরা। এখনো হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে পুলিশ-ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ছোড়া গুলিতে আহতরা। পঙ্গুত্ব নিয়েই বাঁচার জন্য প্রাণপণ লড়াই করছে অনেকে। এরই মাঝে নতুন খেলায় মেতেছে একটি চক্র। মামলার বন্যায় শত্রুতা উদ্ধারে মোক্ষম সময় মনে করছে তারা।   

১০ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় দুটি হত্যা মামলায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাথে আসামী করা হয়েছে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে। ঐ মামলায় আসামী করা হয়েছে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর স্ত্রী দেশবরেণ্য সঙ্গীত শিল্প শেরীফা কাদেরকেও। অবাক করা ঘটনা।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি এবং জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের ভূমিকা অত্যন্ত পরিষ্কার। ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু করেছিলো, তখন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সেই বক্তব্য এখনো ইউটিউবে সংরক্ষিত আছে। 

২০২৪ সালে যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলো তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে ছাত্রদের পাশে থাকতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি সংসদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বক্তৃতা করেছেন। বিবৃতি দিয়েছেন ছাত্রদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে। আটক ৬ সমন্বয়ককে মুক্তি দিতেও দাবি জানিয়ে ছিলেন। 

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর নির্দেশে জাতীয় ছাত্র সমাজ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। রংপুরে জাতীয় পার্টি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশে ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিজয় হয়েছে গণমানুষের। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংসদে জিএম কাদের

২০২৪ সালে যখন চাকরিতে কোটা বিরোধী “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন” শুরু হয়। তখন থেকেই জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের কোটা পদ্ধতির বিরোধীতা করে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়েছেন। বুধবার (৩ জুলাই) দ্বাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপণী বক্তৃতায় বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠন প্রক্রিয়া ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, যে কোন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি কখনই মঙ্গল বয়ে আনে না। তিনি বলেছিলেন... আমরা যেন ভুলে না যাই, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় “এদেশের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জয়ী হতে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি কখনই মঙ্গল বয়ে আনে না। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে।

আন্দোলনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি নেতারা মামলা গ্রেফতার ও গুলিবিদ্ধ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে  রংপুরে ১০ টি মিথ্যা মামলায় জাতীয় পার্টির অন্তত: ৩০ জন নেতা-কর্মী আসামি হয়েছেন। তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। রাজধানীর উত্তর খান থানা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি নাজিম উদ্দীন ভুঁইয়ার ছেলে ওয়াহিদুজ্জামান অলিদ ৫ আগস্ট সকালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উত্তর খান থানা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক আবদুল হালিমের ছেলে মাশরাফি হোসেন ৫ আগস্ট সকালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদের দুজনকেই জাতীয় পার্টির নেতারা দেখতে গিয়েছিলেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাকে সংবিধানবিরোধী - জিএম কাদের

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাকে সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ৬ জুলাই ২০২৪ শনিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী কোটা বৈধ করার কোনো উপায়ও নেই। জিএম কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কোটা পদ্ধতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোটা পদ্ধতি বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ এর ১,২,৩ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সংবিধান সংশোধন করে এটাকে বৈধ করতে পারবে না। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে।

চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী - জি এম কাদের

চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী’ বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক। ৮ জুলাই রোববার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এ মন্তব্য করেন। 

এসময় তিনি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক আন্দোলন। সব সমাজের মানুষই বৈষম্য পছন্দ করে না। তিনি বলেন, সংবিধানে সাম্যের কারণে কিছু মানুষকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সুযোগ দেওয়ার কথা আছে। যারা পিছিয়ে আছে, তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে। পিছিয়ে পড়াদের কতটুকু সহায়তা দেওয়া হবে তাও সংবিধানে বলা আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা তাদের উত্তরাধিকারদের কোটা পদ্ধতিতে সুযোগ দেওয়া সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গণমাধ্যমে বিস্তারিত আছে।

এরশাদের পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে ১৪ জুলাই রোববার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, চাকরিতে স্বল্পসংখ্যক কোটা থাকতে পারে অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য। অনগ্রসর বা আমাদের সঙ্গে যারা সমান তালে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না তাদের জন্য স্বল্পসংখ্যক কোটা থাকতে পারে। সেটা প্রথম ও দ্বিতীয় নয় সব শ্রেণির জন্য কার্যকর করা উচিত। বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, আমরা আস্থা রাখব। আজ যারা ক্ষমতায় আছেন, চিরদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে না। রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা আগামী প্রজন্মের জন্য সমতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে।

জিএম কাদের আরও বলেন, চাকরিতে কোটা থাকবে কি থাকবে না, বা কতটুকু থাকবে তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তা বাস্তবায়ন হবে প্রশাসনের মাধ্যমে। এটা হাইকোর্টে যায় কেন? বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে। 

কোটা-ব্যবস্থা রাখাটাই অযৌক্তিক - জিএম কাদের

১৪ জুলাই ২০২৪ দৈনিক প্রথম আলোর প্রশ্নে প্রতিক্রিয়া জানাতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, কোটাব্যবস্থা রাখাটাই অযৌক্তিক। প্রতিবন্ধী, নারী বা সুনির্দিষ্ট কোনো এলাকাকে যদি অনগ্রসর মনে করা হয়, তাকে সমতায় আনার জন্য কিছু কোটা দেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ ন্যূনতম কোটা-এটাই সংবিধানের স্পিরিট।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবিধান অনুমোদন করে না। মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্ম, যাদের কোটা দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এটা বংশপরম্পরায় সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং এই বৈষম্যের কারণে সমাজটা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে। বিস্তারিত প্রথম আলোতে আছে।

প্রতিটি ছাত্র হত্যায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। ছাত্র হত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে - গোলাম মোহাম্মদ কাদের

১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৬ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে গভীর ক্ষোভ, শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। একই সঙ্গে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানান তিনি।

বুধবার এক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। জিএম কাদের বলেন, ‘ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবি যৌক্তিক। তাদের এ যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনরত ছাত্ররাই বীর মুক্তিসেনা: জি এম কাদের

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪ এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের শিক্ষার্থীদের অহিংস কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে সশস্ত্র বাধাদানের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী তরুণদের প্রতি আমার অভিনন্দন। তাদের আমি ‘বীর মুক্তিসেনা’ হিসেবে অভিহিত করতে চাই।

বিবৃতিতে জাতীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের শহীদ ছাত্রদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। একইসাথে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে। 

২৭ জুলাই দৈনিক সমকালকে দেয়া সাক্ষাতকার

জনগণের স্বতঃফুর্ত আন্দোলনে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন - জিএম কাদের

সমকালকে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, শুধু দমন নয়, নিষ্ঠুর দমনপীড়ন হয়েছে। সরকার সব আন্দোলনকে জামায়াত, বিএনপি, জঙ্গি-নাটক বলে দমন করেছে। এবারও একই নাটক করে নির্মম দমনকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছে। পুলিশের সামনে অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারদলীয়রা হামলা করেছে। পুলিশ এতে মদদ দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন নামানো হয়েছে, ততক্ষণে মানুষ অনেক বেশি ক্ষুব্ধ ও হিংস্র হয়ে উঠেছে। মানুষের মধ্যে নিজেকে বাঁচানোর মরিয়া অবস্থা ছিল। 

হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলির ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটেছে কিনা, জানা নেই। হেঁটে যাওয়া মানুষের ওপর গুলি করা হয়েছে। বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে গুলি করা হয়েছে। এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। যেসব নাশকতার কথা বলা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ধারণা, জঙ্গি-নাটক সাজাতে এতে সরকারি দলের লোকরা জড়িত। বিস্তারিত সমকালে আছে)

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কের মুক্তি দাবি

গেলো ২৯ জুলাই এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এক বিবৃতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে শর্তহীন মুক্তি দেয়ার দাবি জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আটক ৬ সমন্বয়কের পরিবার চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, সরকারের সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের আছে। ছাত্রদের অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে মোকাবেলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে।

দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়ে আবার শোক পালন হচ্ছে প্রতারণা - জিএম কাদের

৩০ জুলাই ২০২৪ এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়ে, শত শত মানুষের জীবন নিয়ে রাষ্ট্র আবার শোক পালন করছে। দেশের মানুষ এধরনের রাষ্ট্রীয়  শোক দেখতে চায় না। মানুষ চায় প্রতিটি ছাত্র হত্যা প্রতিটি হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সে অনুযায়ী বিচার। আমরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এমনভাবে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা না হয় সেজন্য সরকারকে সতর্ক করেন তিনি। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে। 

শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন জি এম কাদের

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট ২০২৪ কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। 

কবর জিয়ারত শেষে নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে যান জিএম কাদের। সেখানে তিনি সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় তিনি আটক শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ছাত্ররা অহিংস আন্দোলনে যে দাবি তুলেছে তা ন্যায্য ও যৌক্তিক। আবু সাঈদ একজন বীর মুক্তিসেনা। শহীদ আবু সাঈদ আমাদের রংপুরের গর্ব। বিস্তারিত গণমাধ্যমে আছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবিতে জাতীয় পার্টির সমর্থন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি পেশ করে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের শীর্ষ নেতাদের সাথে জরুরি বৈঠক করে ছাত্রদের ৯ দফা দাবিতে পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। (দেশের মূলধারার সকল গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রচার হয়েছে।) 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং জাতীয় পার্টির ভূমিকা অত্যন্ত স্পষ্ট। বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা সরাসরি রাজনৈতিক দলগুলোতে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে নিষেধ করায় জাতীয় পার্টি হয়তো ব্যানার নিয়ে আন্দোলনের মাঠে ছিল না। কিন্তু মাঠের আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণের বিষয়টি কারোই অজানা নেই। 

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও তাঁর স্ত্রী শেরীফা কাদের এর নামে করা মামলা দুটির একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ৫ আগস্ট বেলা ১১টায়। ঐহিতাসিক ৫ আগস্টের বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সেনাপ্রধানের আমন্ত্রণে ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেনাপ্রধানের বৈঠক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের আলোচনায় সক্রিয় ছিলেন জিএম কাদের। একই সময়ে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডে জিএম কাদের ও তাঁর স্ত্রী শেরীফা কাদের-কে জড়ানো শুধু মিথ্যা নয়, হাস্যকরও বটে।

এমন বাস্তবতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং তাঁর স্ত্রী শেরীফা কাদের-কে মিথ্যা মামলায় জড়ানো কতটা সমুচিত? আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকতে হবে।   

লেখক: খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংবাদিক ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App