দুর্দান্ত গতির পেসার হিসেবে অনেকেই নাহিদ রানাকে শোয়েব আখতার এবং ব্রেট লির সঙ্গে তুলনা করেন। তবে নাহিদ নিজেকে নিজের মতোই দেখতে চান। অন্য কোনো খেলোয়াড়কে বিশেষভাবে অনুসরণ করেন না তিনি। হতে চান নিজেরই মতো। এক সাক্ষাৎকারে গতকাল এমনটিই জানিয়েছেন দেশের দ্রুতগতির তরুণ পেসার নাহিদ রানা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৫২ কিলোমিটার গতিতে বল করা নাহিদ জানান, গতির বিষয়ে নিজেকে বেশি ভাবতে হয় না তার। বরং নিজের স্টাইল এবং পরিকল্পনা মাফিকই বল করেন তিনি। এ ছাড়া গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সূচনা নিয়ে কথা বলেছেন ২১ বছর বয়সি এই তরুণ। তিনি জানান, পারিবারিক শর্তপূরণ করেই ক্রিকেটের যাত্রা করেন তিনি।

পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর আলোচনায় নাহিদ রানা। এই তরুণ পেসারের গতি এবং বাউন্সের কাছে পরাস্ত হয়েছেন বাবর-রিজওয়ানদের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্যাটাররা। তাই অনেকের মনে প্রশ্ন নাহিদের আইডল কে। কেউ কেউ ধারণা করতে পারে শোয়েব আখতার এবং ব্রেট লি, এই দুজনের মধ্যে কেউ একজন। কারণ গতির কথা উঠলে বিশ্বক্রিকেটে এই দুইজনের নামই প্রথমে আসে। তবে ভিন্ন কথা বলছেন এই টাইগার পেসার। অন্য কারো মতো তিনি হতে চান না। বরং নাহিদ রানা হয়েই থাকতে চান তিনি।

কার মতো হতে চান- এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘আমি কারো মতো নই, আমি নাহিদ রানা, নাহিদ রানাই হতে চাই। সত্যি কথা বলতে সেভাবে কাউকে ফলো করি না। তবে বাংলাদেশের সব পেসারদের আমার ভালো লাগে। কারণ টিভিতে তাদের খেলা দেখে বড় হয়েছি। সে রকম কেউই একজন না। সিনিয়রদের খেলা দেখেই বড় হয়েছি’।

৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে উইকেট সবেমাত্র ১১টি। তবে আলোচনায় নাহিদ গতি আর বাউন্স দিয়ে। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পথে দ্বিতীয় টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ২১ বছর বয়সি পেসার। তবে দুই দল মিলিয়ে সর্বোচ্চ গতি তুলবেন এমনটা মাথায় নিয়ে মাঠে নামেননি তিনি। গতির বিষয়ে নাহিদ বলেছেন, ‘এটা কখনো অনুভব করিনি, ১৫২ বা এর চেয়ে বেশি জোরে করতে হবে। একটা জিনিসই মাথায় নিয়ে বোলিং করেছি যে, দল আমাকে যে পরিকল্পনা দিয়েছে, সেই পরিকল্পনায় বোলিং করেছি। আমার নিজের যে পরিকল্পনা ছিল, তা অনুযায়ী বোলিং করেছি’। পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে সিরিজ হারানো এবং নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে নাহিদ বলেছেন, ‘স্বপ্নের মতো নয়। আমি যেটা আশা করেছিলাম, দল যেটা আমার কাছে আশা করেছিল, তা করতে পেরেছি। দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলাম দেশের জন্য কিছু করতে চাই, তা করতে পেরেছি। অনেক ভালো লাগতেছে’।

ভারত সিরিজেও ভালো পারফরম্যান্স করতে চান নাহিদ। ভারতকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভারত অনেক ভালো দল। তবে দুদলের মধ্যে ক্রিকেটে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। ম্যাচের মধ্যেই দেখা যাবে। অবশ্যই একটা লক্ষ্য আছে। দলকে আমার সেরাটা দেয়ার এখনো বাকি আছে। ইনশা আল্লাহ দেব’। পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন নাহিদ। দেশের এই পরিস্থিতিতেও নাহিদ নিজের বাড়ির আঙিনায় ছিল খুশির জোয়ার। আশপাশের মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানাতে কার্পণ্য করেননি, নিজের বাড়ির মানুষদের উচ্ছ¡াস নিয়ে নাহিদ বলেন, ‘তারা অনেক হ্যাপি। আমার বন্ধুবান্ধব, পরিবার, গ্রামের সবাই। প্রত্যেকে খুশি। তারা সবাই বলছে, এখন ভালো হয়েছে। সামনে আরো ভালো করতে হবে। এগিয়ে যাও’।

উল্লেখ্য, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট দিয়ে ভারত সফর শুরু হবে শান্ত-লিটনদের। কানপুরে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলবে টাইগাররা। এরপরেই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ৯ ও ১২ অক্টোবর।