মিথুনের সংগ্রহে ফুটবলের এত কিছু!

ইব্রাহিম স্বপন মিথুন
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

ফুটবল প্রেমিক ইব্রাহিম স্বপন মিথুন
আমার জীবনের একটা বিশাল অংশ জুড়েই আছে খেলাধুলার অংশ। ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি আমার ভালবাসা। এই ব্যাপারটাতে আমাকে অনেক উৎসাহ দিতো আমার আব্বা। সময়টা ১৯৯৭ সাল। আমি তখন স্কুলে পরতাম। তখন থেকেই আমার আব্বা আমাকে স্পোর্টস ম্যাগাজিন কিনে দিতো। তার মধ্যে ছিল অন্যদিনের খেলা, ক্রীড়ালোক, স্পোর্টস স্টার।
সেগুলার প্রায় সবগুলো সংখ্যাই আমার সেই সময় ছিল। সেগুলার সাথে পোস্টার দিতো। সেগুলো আমি দেয়ালে টাঙ্গাতাম। এভাবেই আমার সংগ্রহশালার সূচনা। এর পরে ১৯৯৮ সালে শুরু হলো ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল। তখন এটা আমাকে আরো পেয়ে বসে। ১৯৯৭ সালে রোনাল্ডো লিমার প্রেমে পরে আমার ব্রাজিল এবং রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক হয়ে ওঠা।
১৯৯৮ সালে আমি ব্রাজিলের অনেক পোস্টার এবং ফ্ল্যাগ কালেক্ট করি। যেগুলো এখনো আমার সংগ্রহে আছে। তারপর ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপের সময় আমি সংগ্রহ করি সবগুলো পেপসি প্লেয়ার কার্ড। এছাড়াও আড় অনেক ক্রিকেটারস কার্ড এখনো আমার সংগ্রহে আছে। তখন আসলে জার্সি বাংলাদেশে পাওয়া যেত না। বাংলাদেশে জার্সি কেনাবেচাটা শুরু হয় ২০০৬ সালের ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপের আগে থেকে।
আমিও ২০০৬ সাল থেকে জার্সি সংগ্রহ শুরু করি। তখন কাটাবনে জার্সি পাওয়া যেত। আবার বিদেশে থাকা বিভিন্ন আত্মীয় এবং স্বজনদের মাধ্যমেও আসল জার্সি নিয়ে আসার চেষ্টা করতাম। দেশ থেকে বিদেশে কেউ গেলে বা বিদেশ থেকে দেশে কেউ আসার খবর পেলেই আমার বায়না থাকতো একটাই- জার্সি লাগবে আর নয়তো টি-শার্ট।
আমার কাছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুটবল দল এবং ক্লাবের প্রায় হাজার খানেক জার্সি ও পলো টি-শার্ট আছে। ১৯৯০-৯১ মৌসুম ও ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ বা স্প্যানিশ লীগে খেলা বিভিন্ন দল ও খেলোয়াড় এবং ১৯৯৮ ও ২০০২, ২০০৬ ও ২০১০ সালের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের ফুটবল দলের জার্সি, টি-শার্ট আমার সংগ্রহে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো আছে বেশ আগের। অনেকটা ভিনটেজ জার্সি। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবের জ্যাকেটও রয়েছে আমার সংগ্রহে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের পতাকাও আমি সংগ্রহ করে থাকি।
সম্প্রতি আমার সংগ্রহশালায় যোগ হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের উইনিং মেডাল। বর্তমানে আমার কাছে রিয়াল মাদ্রিদের ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের মেডাল রয়েছে। আমি যেহেতু ব্রাজিল এবং রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থক; তাই স্বাভাবিকভাবেই আমার কাছে এই দুটা দলের কালেকশনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও আমার কাছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রচুর জার্সি রয়েছে।
২০১১ সাল থেকে আমি স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের অফিসিয়াল মাদ্রিদিস্তাস ফোরামের সদস্য। বিভিন্ন ক্লাবের বিশ্বব্যাপী ভক্ত ও সমর্থকদের ফোরাম থাকে। তেমনি রিয়াল মাদ্রিদের মাদ্রিদিস্তাস। আমি ২০১১ সাল থেকে তাদের অফিসিয়াল মাদ্রিদিস্তাসের সদস্য।
চলতি বছর ২০২8 সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রিমিয়াম মেম্বার হিসেবে আমার সদস্যপদ নবায়ন করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে আমরা রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির পাই। ২০১২ থেকে এখন পর্যন্ত আমি পাঁচটির বেশি অফিসিয়াল স্যুভেনির পেয়েছি। এগুলোর মধ্যে পোস্টার, ব্যাজ, চাবির রিং এবং স্কার্ফ রয়েছে। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন দেশে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকেরা একটা ওয়ার্ল্ড কমিউনিটি হিসেবে সংযুক্ত থাকি এবং ফোরামে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকি।
আমার স্বপ্ন হচ্ছে স্পেনের বার্নাবুর গ্যালারিতে বসে এল-ক্লাসিকো (বার্সালোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যেকার ম্যাচ) উপভোগ করার। প্রতি বছর রিয়াল মাদ্রিদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা তাদের ভক্তদের মাঝে থেকে কিছু ভক্তদের স্পেনে আমন্ত্রণ জানান। সমর্থকেরা বার্নাবুতে বসে এল-ক্লাসিকো উপভোগ করেন। আমারও একদিন সেই স্বপ্ন পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করি।
আমার আরেকটা ইচ্ছা হচ্ছে- একটা এক্সিবিসন করার। যেখানে আমি সবাইকে আমার সখের জিনিসগুলো দেখাতে পারি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি আমাকে কেউ এই ব্যাপারে স্পন্সর দিয়ে সহযোগিতা করবো।