বিশ্বকাপ জয়ে আশাবাদী সাকিব

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৩৮ পিএম

ক্রিকেট কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর বসছে ইংল্যান্ড এবং ওয়ালসে। ইংল্যান্ড থেকে বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে মরিয়া মাশরাফি বাহিনী। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরতে চায় টাইগাররা। এ কথা দেশের প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমী বিশ্বাস করেন, এই দলটা বিশ্বকাপ জিততে পারবে। কারণ ঘরের মাটিতে ও দেশের বাইরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ও বহুজাতিক টুর্নামেন্টগুলোতে টাইগারদের চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স দেখে সবাই মুগ্ধ। যার সর্বশেষ উদাহরণ এশিয়া কাপ। এ ছাড়াও ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ জিততে পারবে- কথাটি টাইগার ব্যাটিং ওপেনার তামিম ইকবাল সংবাদ মাধ্যমের সামনে একাধিকবার বলেছেন। শুধু তামিম কেন, সাকিব আল হাসানও বলেছেন বিশ্বকাপ জয়ের বিষয়টি। বিশ^সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান মানুষের এই বিশ্বাসকে খাটো করছেন না। বরং তিনি গর্ব করে উঁচু গলায় বললেন, দলের সবার মধ্যেও জয়ের এই বিশ্বাসটা আছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়ের বিষয়টি এখন শুধুই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কিংবা বিসিবির সীমানায় আটকে নেই। সাকিবের মতে, সব থেকে বড় ভিত্তি হচ্ছে, বাংলাদেশের সব মানুষ আশা করছে বাংলাদেশ এবার চ্যাম্পিয়ন হবে। এটা তো শুধু শুধু করছে না। এর আগে তো কোনোবার বলেনি যে, আমরা বিশ্বকাপ জিততে পারি। এবার বলছে কারণ তারাও এই জিনিসটা বিশ্বাস করে এবং আমরা প্লেয়াররাও বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, বিসিবির সবাই বিশ্বাস করে যে এ রকম কিছু আমরা করতে পারি।
গতকাল সাকিবকে আরব আমিরাতে খেলার অনুমতি দিয়েছে বিসিবি। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলছেন, এটা কোনো ঝুঁকির বিষয় নয়। বরং আরব আমিরাতে খেললে সেটা হবে ভালো প্র্যাকটিস। এনওসি অবশ্যই স্বস্তির। ভালো দিক হচ্ছে, যদি ওই সময়ের আগে আগে ফিট হতে পারি, যদি কিছু ম্যাচ খেলতে পারি, ওই ম্যাচগুলোও যদি খেলতে পারি, তাহলে ভালো প্রিপারেশন হবে।
টাইগার দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের এই বিশ্বাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো ওয়ানডে ফরম্যাট। যেহেতু এই ফরম্যাটে প্রায় ৪ বছর টাইগাররা অপ্রতিরোধ্য। সাকিব বলেছেন, এই ফরম্যাটটায় আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির তুলনায় আমরা স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি ভালো অবস্থানে আছি। সেদিক থেকে অবশ্যই আশাবাদী। যেভাবে আমরা পারফর্ম করছি, আমরা এখন এশিয়ার সেকেন্ড বেস্ট টিম। শেষবার যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হলো, সেখানে ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল খেলল, আমরা সেই পাকিস্তানকে হারাতে পেরেছি। আমি মনে করি আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে। যেহেতু বেশ কিছু ভালো দল আছে, আমাদের ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে হবে। কারণ বড় টুর্নামেন্ট, নয়টা ম্যাচ, সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া অনেক কঠিন কাজ হবে। আমার কাছে মনে হয় পরের পার্টটা বরং আরও ইজি। এরপর মাত্র দুটি ম্যাচ, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। প্রথমে নয়টা ম্যাচ ভালো খেলে জিততে পারলে, পরে দুটি ম্যাচে জয় সহজ হবে।
তবে সাকিব আল হাসান যত সহজে হিসাবটা দিলেন। কাজটা তত সহজ হবে না। টাইগার অলরাউন্ডার এটাও মানছেন। কারণ ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ভালো খেলতে অনেক পরিশ্রম ও কঠোর অনুশীলন করতে হবে। তার মতে, আমাদের জন্য কঠিন, এটাতে দ্বিমত পোষণ করার কিছু নেই। ইংল্যান্ড এমন একটা জায়গা যেখানে আমরা খুব বেশি ভালো করিনি। যদিও আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলেছি। আমরা কিন্তু শুধু এক ম্যাচ ভালো খেলার কারণেই সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করি। ওভারঅল যদি টুর্নামেন্ট দেখেন, আমরা যে খুব বেশি ভালো করেছি সেটা আমি বলব না। আমাদের অনেক ভালো করতে হবে। আমাদের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভালো অভিজ্ঞতা ছিল, সেটা যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে ভালো কিছু হবে।
অন্যদিকে নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২২ নভেম্বর থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্ট। তারপর রয়েছে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম টেস্টে কি খেলতে পারবেন, নাকি পরের টেস্ট বা ওয়ানডে সিরিজে খেলবেন?
এই প্রশ্নের চমৎকার উত্তর দিয়েছেন সাকিব আল হাসান, আসলে আমরা কেউ টাইম ফ্রেম বলতে পারছি না। এমনও হতে পারে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকে খেলতে পারি, সেকেন্ড টেস্টেও খেলতে পারি। আবার হতে পারে ওয়ানডে পর্যন্ত না খেলতে পারি। তবে আবারো বলছি, উন্নতি যেভাবে হচ্ছে সেই অনুযায়ী খুব বেশি সময় লাগার কথা না।