×

প্রবাস

সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ট্রাম্পের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ বাংলাদেশি হিন্দুদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম

সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ট্রাম্পের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ বাংলাদেশি হিন্দুদের

সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধ ও বিচারের দাবিতে শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ওশান বুলেভার্ডের পামবিচের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশি আমেরিকান হিন্দুরা।

   
  • জাতিসংঘ মহাসচিব ও ট্রাম্পকে স্মারকলিপি

বাংলাদেশে চলমান ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও এর বিচারের দাবিতে বাংলাদেশি আমেরিকান হিন্দুরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ওশান বুলেভার্ডের পামবিচের বাড়ির সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড ঘটলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তীব্র নিন্দা জানান। 

একইসঙ্গে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের আর্জি জানান। স্মারকলিপির একটি অনুলিপি জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ও জাতিসংঘ প্রশাসনের বহু পদস্থ ব্যক্তির কাছেও পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশর সময় শনিবার সকালে সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

হিন্দু বাঙালি সোসাইটি অফ ফ্লোরিডা কর্তৃক আয়োজিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, ইউনাইটেড হিন্দুস অফ ইউএসএসহ বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি-আমেরিকান ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টা স্থায়ী এই প্রতিবাদ সমাবেশে শতাধিক মানুষ অংশ নেন, যাদের মধ্যে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে এসে যোগ দিয়েছিলেন।

হিন্দু বাঙালি সোসাইটি অফ ফ্লোরিডার সভাপতি সঞ্জয় সাহার সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লিটন মজুমদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তাদের মধ্যে ছিলেন নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটিক ডিসট্রিক্ট লিডার ড. দিলীপ নাথ, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শ্যামল চক্রবর্তী ও মেম্বার সেক্রেটারি বিদ্যুৎ সরকার, ইউনাইটেড হিন্দুস অফ ইউএসএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ভবতোষ মিত্র, হিন্দু অ্যাকশন নেটওয়ার্কের পরিচালক শিবু চৌধুরী, ফ্লোরিডা হিন্দু বাঙালি সোসাইটির প্রাক্তন সভাপতি সাধন সরকার ও সদস্য রতন মজুমদার, ইউনাইটেড হিন্দু কাউন্সিল অফ ইউএসএ’র পরিচালক পীযূষ বর্ধন এবং ভূপাল ধর প্রমুখ। 

বক্তারা প্রতিটি সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীকে অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে হিন্দুদের উপর দুই হাজরেরও বেশি নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং নয়টি হত্যা অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং সেটা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সবশেষ পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টানদের উপর বড়দিনের দিনে সন্ত্রাসী হামলায় সতেরটি খ্রিস্টান বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। 

বক্তারা প্রশ্ন তোলে বলেন, বাংলাদেশি সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা যদি তাদের নিজ দেশের বিপন্ন সংখ্যালঘু নাগরিকদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অধীনে বিদেশে শান্তি রক্ষার কাজ করতে পারে কীভাবে? কোনো কোনো বক্তা এই বিষয়টার প্রতি অবিলম্বে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার কথা বলেন। একইসঙ্গে বিচার কাজ শেষ না হয়া পর্যন্ত কোনো প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে ড. ইউনূস এবং তার উপদেষ্টারা যে ঘোষণা করেছেন সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বক্তারা প্রশ্ন তোলে বলেন, দেশকে ইসলামপন্থীদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য তাদের এত আগ্রহ কেন? এরপরেই তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেন। 

এরমধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি দেয়া, সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার নামে ‘ধর্মনিরপেক্ষ-গণতন্ত্র’ এবং বাঙালির ভাষা-ভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদী পরিচয় অক্ষুন্ন রাখা,  ২০১১ সালে সরকারের কাছে হস্তান্তরিত জজ্ সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রতিবেদন যাতে কয়েক হাজার সংখ্যালঘু নিপীড়কদের তালিকাভুক্ত রয়েছে (যার মধ্যে ২,৬০০ জন সরাসরি বিচারযোগ্য) সেটার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার ও শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করা, দেশের প্রগতিশীল মুসলমান এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বকারী সমস্ত প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলিকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। 

এছাড়া সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, দেবোত্তর সম্পত্তি সুরক্ষা আইন প্রণয়ন,  সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধকরণ আইন প্রণয়নসহ সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা যার মূল নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকবে সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের হাতে। এই মন্ত্রণালয় সব ধরণের সংখ্যালঘু সমস্যা, তাদের কল্যাণ এবং সম-অধিকার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করবে, যার মধ্যে থাকবে শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি বাতিল আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তি, এবং ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুনর্বাসন, উপাসনালয়, শ্মশান, তীর্থস্থান ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়নের জন্য তহবিলের ন্যায্য বরাদ্দ করা। বলপ্রর্বক বা ভীতি প্রদর্শনপূর্বক ধর্মান্তর নিষিদ্ধকরণ আইন প্রণয়ন করা। তিনটি প্রধান ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী: হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের কল্যাণের জন্য বিদ্যমান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আদরে পৃথক হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করার কথাও বলা হয়েছে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App