বাংলাদেশকে এখন ‘হাবিবি’র দেশ বলা হয়: আবদুল মোমেন

সাইফুল ইসলাম তালুকদার, ইউএই
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৯ পিএম

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর হাত থেকে সেরা সুপারহিরো প্রবাসী রেমিটেন্স এওয়ার্ড নিচ্ছেন ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন। ছবি: ভোরের কাগজ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে একসময় মিসকিনের দেশ বলা হতো। এখন ‘হাবিবি’র দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশকে ভাইব্রেন্ট ইকোনমির দেশ বলা হয়, ল্যান্ড অব অপরচুনিটির দেশ বলা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগে সৌদি নাগরিকরা বলতেন তোমাদের দেশে উন্নতমানের হোটেল নেই। এই সময় দারিদ্র্যতার খেয়াল ছিল তাদের। কিন্তু এখন আমাদের সব আছে। আমাদের দেশে বহু বড় বড় অট্টালিকা ও বিল্ডিং গড়ে উঠেছে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশকে নতুন উচ্চতায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এর পেছনে দেশের উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদানের কথা স্মরণ করে সাবেক মন্ত্রী বলেন, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে আমাদেরকে দেশের মতো প্রবাসেও প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে।’
শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানের উম্ম আল মুমেনিন উইম্যানস কমিউনিটি সেন্টার গ্র্যান্ড হলে সেরা ১০ প্রবাসী রেমিট্যান্স সুপার হিরো এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবীর মধ্যে ২টি দেশ একটি হচ্ছে গণচীন আরেকটি বাংলাদেশ। আগে আমাদের মধ্যে দারিদ্র্যতা ছিল এখন অর্ধেকের বেশি নেমে গেছে। একসময় ৮০% মানুষ দারিদ্র্যতার সীমার নিচে ছিল। আর এখন মাত্র ১৮%, এটি আমাদের জন্য অভাবনীয় সাফল্য। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত-ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই যে বিরাট পরিবর্তন পৃথিবীর ৩টি দেশ যারা বেশি উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এটি নিয়ে প্রবাসীরা গর্ববোধ করে।’
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে দেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের সম্মান অনেক উপরে উঠিয়েছেন। তার যে প্রচেষ্টা সেই প্রচেষ্টাতে আমাদের প্রবাসীরাও অংশীদার। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের উন্নয়নের বড় অংশীদার। তারা দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে কত কষ্ট করেন প্রবাসে। আমাদের দেশে অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি আপনারা। আপনাদের প্রতি স্যালুট। ’
বাংলাদেশ সরকার ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী দিবস ঘোষণা করেছে, এই দিবসের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আপনাদের যে কোনো সমস্যা আমাদের মিশন কর্মকর্তারা শুনবেন। সেই সমস্যাগুলো দূর করার প্রচেষ্টা চালাবেন। এই দিবস প্রতি বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি মিশনে এই দিবসে প্রবাসীদের নিয়ে প্রবাসী দিবস পালন করা হবে। উদ্দেশ্য হল আমাদের সমস্যা দূর করা। সেই সাথে আমাদের উন্নয়নে আপনারা কিভাবে সম্পৃক্ত হতে পারবেন, সেই লক্ষ্য এগিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ সমিতি দুবাইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইয়াকুব সৈনিকের সভাপতিত্বে অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ ও শফিকুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল (এমপি), আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর, দুবাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন, প্রকৃতি ও জীবন’র চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বাংলাদেশ কুকিং এসোসিয়েশনের সভাপতি কেকা ফেরদৌসী, বাংলাদেশ সমিতি আবুধাবির সভাপতি প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ ।
আরো পড়ুন: আমিরাতে মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে মিরসরাই সমিতি
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান ও যুগ্ম-আহ্বায়ক কামাল হোসেন সুমন। পরে শিল্পী তামান্না হক, সুরকার-শিল্পী আকাশ মাহমুদ, জয়শ্রী বিশ্বাস, জাভেদ সরোয়ার, বঙ্গ শিমুল ও শম্পা শফিকের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।