হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন,  ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগসহ এর সব অঙ্গ-সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের নায়েবে আমির আল্লামা আলী উসমান সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগের চেয়ে অনেক বেশি সন্ত্রাস করেছে যুবলীগ। তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগ। যে কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, সেই কারণে যুবলীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হাতুড়ি লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে, হেলমেট লীগ নিষিদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবার কোনো অধিকার নাই।’

তিনি বলেন, ২০০৯, ২০১৩, ২০২১ সালে ও ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা যতগুলো গণহত্যা করেছে, প্রতিটি গণহত্যার জন্য তার  এবং তার সহযোগীদের বিচার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই-এই খুনি হাসিনাকে ধরে এনে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। তার বিচার করতে হবে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে জনতাকে হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

হেফাজতের এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ৭২-এর সংবিধানের চেতনার ওপর নির্ভর করে রাজনীতি করেছেন। শুধু শেখ হাসিনা নয় তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবও ৭১-এর চেতনা, স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনাকে দুই পায়ে পদদলিত করেছেন, এদেশের মানুষের ভোটাধিকারকে বুটের চাপায় পিষ্ট করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ৭৫ থেকে শুরু হলো শেখ হাসিনার প্রতিশোধের রাজনীতি। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ২৪-এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতিকে পর্যবেক্ষণ করলে খুঁজে পাওয়া যাবে তার রাজনীতির মূলনীতি ছিল দুটি। দুটি দর্শনের ওপর ভিত্তি করে চলেছে তার রাজনীতি। প্রথম দর্শন ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি। দ্বিতীয় দর্শন ছিল বিভাজনের রাজনীতি। তিনি প্রতিশোধ নিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের ওপর, তিনি প্রতিশোধ নিয়েছেন জাতির ওপর।