দুদু
বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: ভোরের কাগজ
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলাদেশকে রক্ষা করার আর কোনো পথ নেই। এই দেশ স্বাধীন করতে এক সাগর রক্ত দিয়েছে এ দেশের মানুষ। এ রকম রক্ত পূর্ব এশিয়ার কোনো জাতি দেয়নি। শুধু তাই নয় বিশ্বের অন্য কোনো জাতি দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই। সেই দেশে ৫২ বছর পরে এসে গণতন্ত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলতে হবে এটা বড়ই ট্রাজেডি। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মানুষকে ভোটের অধিকার দিতে হবে। নির্বাচন করার ক্ষমতা দিতে হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আসে দিন যায় পত্রিকার উদ্যোগে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, যাদের হাতে বাংলাদেশ পড়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের হাতে। আমরা চোর উৎপাদনের হাতে পড়েছিলাম। শেখ মুজিব জীবিত থাকা অবস্থায় তার ছেলে ব্যাংক ডাকাত হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। তার সহ পরিবার মারা গেছে। অপশাসনের কি ভয়ংকর পরিণতি তা আমরা দেখেছি। তার দুটি কন্যা ছিল তারা এত বড় লুটেরা, খুনি যে ইতিহাসের ভয়ংকর অধ্যায় হিসেবে থাকবে। তারা লুকিয়ে থেকে পালিয়ে গিয়ে রাজনীতির কথা বলে তখন আমার মনে প্রশ্ন থাকে রাজনীতির অর্থটা কি।
শেখ হাসিনাকে গুলিস্তান মোড়ে বিচার করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের বিচার হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, নিম্ন আদালতে নয় গুলিস্তান মোড়ে বিচার করা উচিত। তারা যেভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে এটা ভাবা যায়। যারা হত্যাকারী তাদেরকে রক্ষা করার জন্য সেনাবাহিনী ছিল। আর এদেশের কৃষক শ্রমিক যারা দেশকে রক্ষা করছে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য আনসার বাহিনীও নাই।
আরো পড়ুন: নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা তারেক রহমানের
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সমর্থন করেছি এদেশের গণতন্ত্রকামি মানুষ সমর্থন করেছে। সহযোগিতা করার জন্য উন্মুক্ত হয়ে আছে। এ সরকারের যারা আছেন তারা হয়তো রাজনীতি করে নাই। কিন্তু তারা জ্ঞানী। তাদেরকে বুঝতে হবে। কারণ বুঝে শুনেই তারা ক্ষমতা নিয়েছে। তাদের মত জানাশোনা লোক বাংলাদেশে কমই আছে। রাজনীতি বুঝতে হবে। যদি না বুঝেন। তাহলে আমাদের কাছে আসুন শ্রেণী পেশা মানুষের কাছে যান, কৃষক শ্রমিকের কাছে যান। কে লুটেরা, খুনি এটা না বোঝার কিছু নাই। দিনের আলোতে তারা করেছে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলাদেশকে রক্ষা করার আর কোনো পথ নেই মন্তব্য করে বিএনপি এ নেতা বলেন, এই দেশ স্বাধীন করতে এক সাগর রক্ত দিয়েছে দেশের মানুষ। এরকম রক্ত পূর্ব এশিয়ার কোন জাতি দেয়নি। শুধু তাই নয় বিশ্বের অন্য কোন জাতি দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই। সেই দেশে ৫২ বছর পরে এসে গণতন্ত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলতে হবে এটা বড়ই ট্রাজেডি। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মানুষকে ভোটের অধিকার দেন। নির্বাচন করার ক্ষমতা দেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একটা নির্বাচন দেন। কিসের পুলিশ কিসের প্রশাসন? এসব বাহানা আমাদেরকে বাদ দিতে হবে। যে জাতি বিনা অস্ত্রে একটা ফ্যাসিস সরকারকে তাঁরিয়েছে। তাহলে নির্বাচনের জন্য এত প্রস্তুতি লাগবে কেন? আপনারা মানুষকে ছোট করে দেখবেন না। নির্বাচন দেন নির্বাচন কিভাবে করতে হয় দেশে জনগণ জানে। পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, পাকিস্তানে কর্মকর্তাদেরকে আঙ্গুল দেখিয়ে একটা দলকে বিজয় করেছিল। জিয়াউর রহমানকে অখন্ড সমর্থন দিয়েছিল এদেশের মানুষ। বেগম জিয়াকে কেউ পাত্তাই দেয়নি। আওয়ামী লীগ এ দেশের বুদ্ধিজীবী কেউ দেই নি। বেগম জিয়া এরশাদকে হঠিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়ে তিনি প্রমাণ করেছিলেন তিনি যোগ্য।
আরো পড়ুন: আনুপাতিক হারে আসন বণ্টনের দাবিতে ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, জাতীয়তাবাদীদের ঠেকানো শুরু হয়েছে ওয়ান ইলেভেন থেকে। তার ধারাবাহিকতা এখনো আছে। কিভাবে বিএনপিকে ঠেকানো যায়, কিভাবে স্বাধীনতা পন্থীদেরকে ঠেকানো যায়, কিভাবে গণতন্ত্র পন্থীদেরকে ঠেকানো যায়। এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতার পক্ষে গণতন্ত্রের পক্ষে ভালোর পক্ষে আর যারা বিপক্ষে ফ্যাসিস্টের পক্ষে তারা বিভিন্নভাবে ধুম্রজাল সৃষ্টি করার পায়তারা। কারণ তাদের হাতে টাকা আছে। ব্যাংক লুটের টাকা আছে। এদেশের সাধারণ জনগণের কষ্টে অর্জিত টাকা তারা লুটপাট করে রেখেছে। অস্ত্র আছে। তাদেরকে আবার বুঝতে হবে। এত কিছু থাকার পরেও তারা তাদের পতন ঠেকাতে পারেনি।
আসে দিন যায় পত্রিকার সম্পাদক এস এম রফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট নজরুল ইসলাম রাজন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ লিবারেল পার্টির চেয়ারম্যান শেখ মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওসার হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এম জি আর নাসির মজুমদার, কর্নেল অব. আব্দুল হক, মানবাধিকারকর্মী মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কৃষক দল নেতা এসকে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।