বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব
পোড়া শরীরে দাঁড়িয়ে আছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়ে নিকষকালো হয়ে গেছে মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ভবনটি। আশপাশের রং করা ভবনগুলোর মাঝে জৌলুস হারানো পোড়া ভবনটিকে একেবারেই বেমানান লাগছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালের আগেও অন্য সব ভবনের মাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল ৯ তলা এই ভবনটি। কিন্তু ওই দিন বিকাল ৪টায় দুর্বৃত্তের দেয়া আগুন সব ধ্বংস করে দেয়। এখন ভবনের সামনে, ভেতরে, বেজমেন্টে কেবল পোড়া গাড়ি, পোড়া গন্ধ, আর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নাশকতার চিহ্ন, ধ্বংসস্তূপ। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরের টাইলসগুলোও ভেঙে চৌচির। দেয়ালে টেরাকোটায় ভাস্কর্যটিও এখন বিদঘুটে হয়ে আছে। বিদ্যুৎহীন ভবনটির ভেতরে যেন গা ছমছম ভূতুড়ে পরিবেশ। কারফিউয়ের মধ্যেও যারা এই পথে চলাচল করছেন, তারা খানিক থমকে তাকিয়ে দেখছেন পোড়া ‘শরীরে’ দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটিকে। অধিদপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেই ধ্বংসস্তূপের সামনে এসে অপলক তাকিয়ে ফেলছেন দীর্ঘশ্বাস।
গতকাল মঙ্গলবার সরজমিন এমন চিত্রই দেখা গেছে। এ সময় অধিদপ্তরে উপস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গেটে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুন দেয়ার আগে তারা পাউডার জাতীয় কিছু একটা ছিটিয়ে দেয়। আগুন দেয়ার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যারা আগুন দিয়েছে তাদের বয়স ২০ বছরের উপরে নয়। আগুনে ভবনের সামনে থাকা কয়েকটি গাড়ি পুড়ে যায়। একপর্যায়ে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। ভবনের নিচতলায় সার্ভার রুম, কম্পিউটার ল্যাব, ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের অফিস ছিল। এই ভবনে আগুনের ঘটনায় পাশে থাকা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সঞ্চালন তার বা অপটিক্যাল ফাইবার পুড়ে যায়। এই অপটিক্যাল ফাইবার থেকেই দেশজুড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যায়।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ ভোরের কাগজকে বলেন, দুর্বৃত্তরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে; যা অবর্ণনীয়। পুরো ভবনজুড়েই সেই ক্ষত। দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে অধিদপ্তরের ৫৩টি গাড়ি ও ১৪টি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এগুলো মেরামত অযোগ্য। তিনি আরো বলেন, দুর্বৃত্তরা যখন আগুন দেয়, তখন আমি অফিসেই ছিলাম। ছড়িয়ে পড়া আগুনের তাপে সেখানে থাকা যাচ্ছিল না। মই দিয়ে টপকে পাশের ভবনে গিয়ে আমি ও আমার কয়েকজন সহকর্মী আত্মরক্ষা করি।