‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরো গভীর হয়েছে’

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৫:০২ পিএম

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: ভোরের কাগজ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরো গভীর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এসময় সংকট নিরসন না হলে ‘সরকারের ভবিষ্যত খুব ভালো নয়’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন- ‘সরকারের একটা ফলস ধারণা তৈরি হয়েছে যে, সংকট থেকে তারা উপরে উঠে গেছেন। তবে সরকারের সংকট আরো গভীর হয়েছে। সংকট নিরসনের চেষ্টা না করলে ভবিষ্যত সরকারের জন্য খুব ভালো না ।’ রবিবার (১২ মে) দুপুরে গুলশানে দলীয় চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কাযালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। দীঘ ৬ মাস পরে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের গত ৮ মে রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, এখানে একটি গোত্র তৈরি করা হচ্ছে যাদেরকে সমস্ত রকম দুর্নীতি-অনিয়মের মধ্য দিয়ে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছ, একটা লুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেটা দিয়ে তারা এই সরকারকে টিকিয়ে রাখছে। এর মধ্যে তারা নিজেরাও জড়িত এবং তাদের সুবিধাভোগী লোকজনও জড়িত।

আজকে যেগুলো দেখছেন সেগুলো হচ্ছে লুট, মেগা লুট। একজন ব্যক্তি সে এখন সিঙ্গাপুরে গিয়ে হাইয়েস্ট ইনভেস্টরের দিক থেকে ৪ নম্বরে আছেন। আর কয়েকজন ব্যক্তি আছেন পানামা লিস্টের মধ্যে নাম এসেছে। এতো এতো টাকা তারা বানিয়েছেন, দুর্নীতি-অনিয়মের ওপর ভিত্তি করে এই রাষ্ট্রকে কি করে পরনির্ভরশীল করা যায় এবং তাদের বিশেষ গোত্রকে কিভাবে অন্যায়ভাবে আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী করা যায় সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন- ‘একটি রাষ্ট্র কখন ব্যর্থ হয়? যখন অর্থনৈতিক, মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলে, যখন তার রাজনৈতিক স্ট্রাকচার ভেঙে ফেলে, সামাজিক কাঠামো ভেঙে যায়, যখন কোথাও জবাবদিহিতা থাকে না তখন রাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, রাষ্ট্রে নৈরাজ্যর সৃষ্টি হয়। এখন গোটা দেশে একটা নৈরাজ্য চলছে।
সরকারি হাসপাতালে অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা কি সরকারি হাসপাতালে কেউ গেছেন ? যদি যান বিশেষ করে ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতালে যান তাহলে দেখবেন হাসপাতালের চারপাশে নতুন নতুন ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক গড়ে উঠেছে, এটা বড় ব্যবসা। এখান থেকে দালালরা আসে সরকারি হাসপাতাল থেকে ধরে নিয়ে যায় রোগী, এই হচ্ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দলীয়করণে উপাচার্য ও শিক্ষক নিয়োগের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কারণে ব্রেনড্রেইন হয়ে যাচ্ছ। যারা মেধাবী, যার নিজের যোগ্যতা আছে তারা দেশে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতেই হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খবর পাচ্ছি নতুন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হচ্ছে।’ বিরোধী রাজনীতি করে এমন সবাইকে কারাগারে রাখার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় বিষয়ক সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন- ‘দেখুন এসব আমাদেরকে জিজ্ঞাসা না করে উনাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) জিজ্ঞাসা করুন। এসব নিয়ে আমরা ইন্টারেস্টেড না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জনগণের ওপরই আমাদের ভরসা, আমাদের পুরো আস্থা। সেই আস্থার উপরে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি। আমাদের রাজনীতিও দেশের আপামর জনগণকে নিয়েই।