প্রবল বৃষ্টিতে পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধস, নিহত ৩৫

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৬ এএম

টানা ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল। ছবি : সংগৃহীত
কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল। দেশটির এই অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার পাশাপাশি বহু এলাকা ভেসে গেছে এবং ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। দুই দিনে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ভোগে পড়েছেন আরো বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃষ্টির পানির স্রোত উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মনোরম চিত্রাল জেলার বিভিন্ন অংশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। বুধবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যায় বাড়িঘর, সেতু এবং গবাদিপশু ভেসে গেছে, শহরের সঙ্গে বহু গ্রামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধসও হয়েছে এবং কাদার স্রোত ভেসে এসেছে। এতে করে বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয় ইসরার আহমেদ ফোনে আনাদোলুকে বলেন, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। আল্লাহর রহমতে, বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার কারণে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের তুলনায় মানুষের ক্ষয়ক্ষতি তেমন বড় নয়। তবে, প্রচুর অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার কোহাট জেলায় একটি বাড়ির বেসমেন্ট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় একই পরিবারের প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ থর মরুভূমিতে বজ্রপাতে আরো আটজন প্রাণ হারিয়েছেন।
আরো পড়ুন : পাকিস্তানের কুররামে সংঘর্ষ, পাঁচদিনে নিহত ৩৫
আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে দেশটির বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্য কাগান ও নারানের সংযোগকারী একটি মূল সেতু। এতে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চল। ফলে শত শত পর্যটক দুই দিন ধরে সেখানে আটকে আছেন।
২ থেকে ৬ আগস্ট করাচি, লাহোর এবং ইসলামাবাদের মতো প্রধান শহরগুলোর পাশাপাশি সারা দেশে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ।
সবাইকে সতর্ক থাকতে এবং সম্ভাব্য বৃষ্টির কারণে মানব ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত এই সংস্থাটি বিভিন্ন ত্রাণ ও উদ্ধার সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে থাকে।
জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত বর্ষা মৌসুম দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দীর্ঘকাল ধরে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সেটি প্রধানত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।