‘জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র’

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ০৭:০৭ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস চুক্তি নিয়ে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অনুরোধে আমি এখানে এসেছি । কারণ যুক্তরাষ্ট্র আবার প্যারিস এগ্রিমেন্টের বাস্তবায়নের নেতৃত্বে ফিরে এসেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, আমাদের নাগরিক এবং দেশগুলোকে সুরক্ষার জন্য এ চেষ্টা। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা কোনো একক দেশ সমাধান করতে পারবে না।”
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন দুর্যোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে যুকরাষ্ট্রের সাবেক এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরে মানব ইতিহাসের মাসগুলোর মুখোমুখি হয়েছি আমরা। বিশ্বব্যাপী মানবসৃষ্ট দুর্যোগ দেখেছি। ভাইরাস, খরা, সমৃদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হওয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছু দেখছি।
কেরি বলেন, এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষ বাস্তচ্যুত হয়ে অন্যত্র যাওয়া শুরু করেছে। বিজ্ঞানের শিক্ষা থেকে আমরা জানতে পেরেছি সবাইকে এক সাথে কাজে নামতে হবে।’
আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল বাইডেনের আহ্বানে লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট অনুষ্ঠিত হবে। তাতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই এই সফর শুরু করেছেন বলে জানান তিনি।
[caption id="attachment_277159" align="alignnone" width="642"]
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত তহবিলে বাইডেন সরকার বকেয়া ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে আবার কাজ শুরু করবে। আমি দুঃখিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। তবে আমরা আবারও ফেরত এসেছি।
এ সময় রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে জন কেরি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আপনারা তাদেরকে একটি দ্বীপ (ভাসানচর) দিয়েছেন। এ সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ বলে জানান কেরি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা হয়েছে এবং এখন মিয়ানমার জনগণের সঙ্গে যা হচ্ছে, সেটি বর্তমান সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন এ বিষয়ে নজর রাখছেন। তিনি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সবকিছু করবেন।রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত। কারণ, এটি বাংলাদেশের একার বোঝা নয়। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলার জন্য প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলার তহবিলে অর্থায়নের কথা উন্নত বিশ্বের। এ বিষয়ে অগ্রগতি খুবই কম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরিকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আরও বলেন, ‘জন কেরি সব জায়গায় সফল হয়েছেন। আশা করি, তিনি বছরে ১০০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহের কাজটি করতে পারবেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বনায়ন ধ্বংস করছে। তাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে স্থায়ী প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা দরকার বলে কেরিকে জানিয়েছি।’ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় অর্থ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন এবং বাংলাদেশ আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সেটি যোগান দেবে বলে তিনি জানান।