পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে দ্রুত অগ্রগতি হবে: গভর্নর

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

প্রতীকী ছবি
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কথা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, দ্রুত অগ্রগতি হবে। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা আরো প্রয়োজন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন।
এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এখন পর্যন্ত সোয়া লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ঋণের এ অর্থের পুরোটাই পাচার হয়ে গেছে ধরা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্থপাচার সম্ভব ছিল না। সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কি ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে সংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, আমার সময়ের অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। আগে কি হয়েছে, তা দেখার জন্য বসে থাকবো না। তদন্ত প্রতিবেদন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
ঋণ কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোতে ফরেনসিক অডিট করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে অর্থ লোপাটকারী ও সুবিধাভোগিদের নাম বেরিয়ে আসবে বলে ধরা হচ্ছে। সেই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ব্যাংকারদের নাম আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আগামী জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে বিনিময় হার একটি স্থিতিশীল জায়গায় থাকতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ডলারের বিনিময় হার এখন একটি ব্যান্ডের মধ্যে রেখে লেনদেন করতে দেয়া হচ্ছে। একেবারে খোলা ছাড়া যাবে না, কারণ আমাদের বাণিজ্য ভারসাম্য অনেক ভালো অবস্থানে আছে। আমরা কেনো এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের দেয়া দর অনুযায়ী ডলার কিনবো, আমাদের সেই অবস্থান নেই। আমরা এখন দর কষাকষি করে কিনবো।
বিদেশি চারটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান কারসাজি ও জোটবদ্ধ হয়ে ডলারের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি বড় দেশের দূতাবাস পর্যন্ত এসেছে তাদের দেশের এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে ডলারের দর কেনার জন্য তদবির করতে। আমরা বলে দিয়েছি, আমরা ক্রেতা, দর আমরা দিবো। এই দরে যার কাছে ডলার পাবো তার কাছ থেকেই কিনবো। তাদের বলেছি, ডলারের দর বাজার অনুযায়ী করতে।
গভর্নর বলেন, আমরা জানি ডলারের দর কতোটুকু হতে পারে। আমাদের রিজার্ভ তো ভালো অবস্থানে আছে। আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি এখনো না পেলেও রিজার্ভ স্বস্তিতে আছে। আমরা কেনো রেট বাড়াবো।
চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৪ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ হতে পারে পূর্বাভাস দিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি আগেও বলেছি ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছর প্রবৃদ্ধির বছর হবে না। এটি হবে সামষ্টিক অর্থনীতির পুণরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতার বছর।
তিনি বলেন, আমি বড় প্রবৃদ্ধি হবে আশাও করি না। স্বপ্নও দেখি না। কারণ, এটি সম্ভব না। মুদ্রানীতির এখন উদ্দেশ্য হলে সামষ্টিক অর্থনীতিকে সচল করা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। মুদ্রানীতি দিয়ে এটি করতে গেলে অন্যান্য বিষয়ে খুব একটা দেখার সুযোগ নেই। অর্থনীতির একটা নীতি দিয়ে একটা উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।