সাদিক অ্যাগ্রোর মালিকের ২৭ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১২ এএম

ছবি: সংগৃহীত
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছেন আদালত। গত বুধবার (১ জানুয়ারি) এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদালত ইমরান হোসেন এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী ইমরানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এসআই মো. জোনাঈদ হোসেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধের আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর আর্থিক লেনদেন অবরুদ্ধ করে। এর ফলে মো. ইমরান হোসেন ও তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসরদের ছত্রছায়ায় রাতারাতি মাফিয়া হয়ে ওঠেন সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন। তিনি অনুমোদনহীন জাতের ব্রাহমা গরু আমদানি ও বিভিন্ন প্রভাবশালীদের যোগসাজশে গরু চোরাচালানে যুক্ত ছিলেন। সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় আবেগ ও অনুভূতিকে পুঁজি করে প্রতারণার মাধ্যমে দেশি গরু ও ছাগলকে বিদেশি বলে প্রচার করে মোটা অঙ্কে বিক্রি করতেন। এছাড়া প্রশাসন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সুবিধা দিয়ে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধসংলগ্ন খাল ও সরকারি জমি জবরদখল করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেন। তার বিরুদ্ধে এসব অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা গুরুত্ব পায়। এরপর সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ক্ষমতাচ্যুত সরকারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে অনুসন্ধান শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করে। সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে যোগসাজশ করে গরু চোরাচালান, নিষিদ্ধ ও অনুমোদনহীন গরু আমদানি, জালিয়াতির মাধ্যমে উচ্চমূল্যে কুরবানির পশু বিক্রি এবং প্রতারণার মাধ্যমে দেশি গরু-ছাগলকে বিদেশি বলে বিক্রি, জবরদখল ও অর্থ পাচারের বিষয়গুলো সামনে আসে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে শনিবার সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার ব্যক্তিগত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানা গেছে, মামলা থাকায় ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন ও তার সহযোগীরা আত্মগোপনে রয়েছেন।