ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান বেন্ডস্টার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সরকারের ই-সিগারেট ও ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ইএনডিএস) আমদানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেন্ডস্টা)।
এই সিদ্ধান্তের আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে আমদানিনিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় ই-সিগারেট বা ইএনডিএসকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য প্রমাণিত কম ক্ষতিকর একটি বিকল্প বেছে নেয়ার পথ বন্ধ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছে বেন্ডস্টা।
আন্তর্জাতিক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বেন্ডস্টা জানায়, ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি ও অফিস ফর হেলথ ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড ডিসপারিটিস-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভেপিং বা ই-সিগারেট প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর।
সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কারণে বর্তমানে যারা ই-সিগারেট ব্যবহার করছেন, তারা আবার প্রচলিত সিগারেটের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য আরো বড় ঝুঁকি বয়ে আনবে।
বেন্ডস্টা বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করলেই এর ব্যবহার বন্ধ হয় না। বরং আইনসম্মত পথ বন্ধ করলে গড়ে ওঠে কালো বাজার। ভারতে ২০১৯ সালে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পর অবৈধভাবে এই পণ্য বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এতে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ও জবাবদিহিতা না থাকায় ব্যবহারকারীরা ঝুঁকির মুখে পড়েন। নিম্নমানের পণ্য ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নাল প্রিভেন্টিভ মেডিসিন রিপোর্টস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখানো হয় যে, ভারত সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরও ই-সিগারেট তরুণদের জন্য সহজলভ্য রয়ে গেছে। এতে স্পষ্ট হয় যে কালো বাজারে নিষিদ্ধ পণ্যেরও বেচাকেনা অবাধে চলতে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এই অনিয়ন্ত্রিত ব্যবসা ব্যবহারকারীদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে এবং সরকারও হারিয়েছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
সংগঠনটি জানায়, কেবল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেই কোনো পণ্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা যায় না বরং এতে নকল ও নিম্নমানের পণ্য ছড়িয়ে পড়ার মতো নতুন সমস্যা তৈরি হয়। বেন্ডস্টা সরকারকে প্রমাণভিত্তিক ও বাস্তবসম্মত নীতি গ্রহণের আহ্বান জানায়, যা তামাকজনিত ক্ষতি হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বেন্ডস্টার বিশ্বাস, ই-সিগারেটের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিসংগত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দরকার। এর মাধ্যমে একদিকে জনস্বাস্থ্য লক্ষ্য অর্জন করা যাবে, অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য নিরাপদ বিকল্প নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সংগঠনটি একটি সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি করতে সরকার ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। ধূমপান রোধে বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত তামাকের ক্ষতিহ্রাস কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষাবলয় গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।