নৌপরিবহন উপদেষ্টা
মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশিদের বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পিএম

শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দেশের বন্দর অবকাঠামোর উন্নয়ন ও জাহাজ শিল্পসহ মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশিদের বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা সাংবাদিকদের দেশের উন্নয়নে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গঠনে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা সচ্ছতার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনারা সঠিক তথ্য সরকারের সামনে তুলে ধরুন। কোনো দপ্তরে কোনো সমস্যা, অনিয়ম আমাদের জানান, আমরা ব্যবস্থা নেবো। কোথাও কোনো অনিয়মের বিষয় জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রতিমাসে কমপক্ষে ৩টি করে তদন্ত কমিটি হয় এবং তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম জনগণের জন্য উন্মুক্ত আছে। বর্তমান সরকার জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। জনগণের জানার অধিকার আছে যে সরকার তাদের জন্য কি উন্নয়ন করছে। সব কার্যক্রম ও এ সংক্রান্ত তথ্য জনগণের জন্য অবারিত ও উন্মুক্ত থাকবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা নৌ সেক্টরে বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার জট কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ডকইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নৌপথে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। বিগত ৫৩ বছরে দেশের বন্দরগুলো কিভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং কোন বন্দর কোন কাজ করবে সে বিষয়ে জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। বন্দরগুলোর কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে গতিশীল করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল পোর্টস স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক এ কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করছে।
আরো পড়ুন: পুলিশি টহল বাড়াতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
তিনি বলেন, এছাড়াও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি মোংলা সমুদ্রবন্দরকে গ্রীণ পোর্টে রূপান্তরিত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার সব প্রকল্পের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কমিটি গঠনের পর নিয়মিত প্রকল্পগুলোর কর্যক্রম পরিদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছে। কোনো অনিয়ম বা গাফিলতি নজর আসলেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে এই সেক্টরে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সাম্প্রতিক সময়ে মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশিদের বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। এক প্রকার প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ঋণের প্রথম কিস্তির টাকা সরকারকে পরিশোধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মোংলা বন্দরের একটি প্রকল্পে নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে ২৭১ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় কমানো সম্ভব হয়েছে যা নতুন এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। বিগত সময়ে অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেয়া হয়। এখন থেকে জনগণের জনকল্যাণকর ও দেশের আমদানি-রপ্তানির সুবিধার জন্য যে কাজ করা প্রয়োজন সেটিই বাস্তবায়ন করা হবে।