সংস্কৃতি চর্চাকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ফারুকী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর এটা স্রেফ সরকার পরিবর্তন না। একটা বড় বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে গেছে আমাদের দেশ। যারা সংস্কৃতি চর্চা করেন, আমি মনে করি তারা সবার প্রতি একই ধরনের উদারতা দেখাবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে হলেও সত্য যে, আমি দেখেছি, আমাদের শাহবাগের সেই সাংস্কৃতিক আড্ডাগুলোতে পূজা-বড়দিন নিয়ে আলোচনা করা হলেও ঈদ নিয়ে কথা বলাকে স্মার্ট হিসেবে ধরা হতো না।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, আমার ধারনা, বিগত ১৫ বছরে আমাদের যে অধঃপতন হয়েছে— এটা বাইরে রাজনীতিগত অধঃপতন, আর ভেতরে সাংস্কৃতিক অধঃপতন। সাংস্কৃতিক অধঃপতনের জন্য কে দায়ী কারা দায়ী— এটা আলোচনা ও বিশ্লেষণ করা যাবে।
ফারুকী বলেন, এই যে আমরা কাউকে ‘অপর’ ভেবেছি আবার কেউ আমাদের ‘অপর’ ভেবেছে। আমি মনে করি, এই অপর ভাবা বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো কিছু না। সামনে এই বিপ্লবের পরে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ চাই এবং নতুন প্রজন্ম যে নতুন বাংলাদেশ চায়, আমি মনে করি, নতুন প্রজন্ম এই ‘অপরায়ন’ থেকে দূরে থাকতে চায়। তারা আমাদের বহু ভাষা, ধর্ম , মতের মানুষ মিলে মিশে থাকুক এটাই চায়। কেউ কাউকে হেয় না করুক এটা তারা চায়। যদি এটি করা যায়, তাহলে সত্যিকার অর্থে আমরা আলোকিত মানুষ হিসেবে তাদের গড়ে তুলতে পারবো। আমরা সেই আলোকিত মানুষ হওয়ার পথেই যাত্রা শুরু করেছি। জুলাই সেদিকে আমাদের নিয়ে যাক।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার বেশ বড়রকমের ভূমিকা রাখে এবং তা অর্থনৈতিকভাবেও নানারকম সহায়তা করে থাকে। এখানে কিন্তু সরকারের নিজের কোনো টাকা নেই, টাকা দেশের মানুষের। মানুষের টাকা মানুষের কাজেই ব্যয় করতে হয়। এই ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারও জনগণের কাজ এবং এই কাজে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যুক্ত থাকতে পারছে বলে আমি মনে করি যে, মন্ত্রণালয় তার কাজ ঠিকঠাক করছে। আমরা সামনে এই কাজ নিয়ে আরো এগোবো। আরো বহু আলোচনা আমরা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে করবো। এটাকে কীভাবে আমরা আরো ছড়িয়ে দিতে পারি, সেটি নিয়ে কাজ করবো।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শিক্ষাবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হক। এতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, এ বছর ৩টি গাড়ির মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলার ১২৮টি স্থানে বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন করার কথাও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।