বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়ায় ভুয়া খবর ছড়ানোর নেপথ্যে যেসব কারণ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ এএম

বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তার থেকে অনেক বেশি মাত্রায় ভারতের নির্বাচনী স্বার্থ এখানে কাজ করছে। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির পর থেকে ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে এক ধরনের ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাব দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদনের ভাষা, উপস্থাপনা এবং তথ্য যাচাই না করেই তা প্রকাশ করা হচ্ছে ভারতের এক শ্রেণির গণমাধ্যমে। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভুয়া খবরও ছড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, আবার সেগুলোই স্থান পাচ্ছে ভারতের নানা খবরের কাগজ-টিভিতে।
গণমাধ্যমের একাধিক বিশ্লেষক বলছেন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমে একটা বিরোধিতার সুর দেখা যাচ্ছিল। তবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির পরে তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। ‘হাজার হাজার হিন্দুকে বাংলাদেশে হত্যা করা হচ্ছে, হিন্দু নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে’ এ ধরনের বাক্য প্রায়শই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে ভারতে সংগঠিত বিক্ষোভগুলো থেকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক ভাষণ, কাগজ-টিভির প্রতিবেদন এবং সামাজিক মাধ্যম – সব মিলিয়ে যে আখ্যান তৈরি করা হচ্ছে ভারতে, তা দেশটির হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে অনেক সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে ফেলছেন।
কী কী ভুয়া খবর
ভারতের তথ্য যাচাই ও ভুয়া খবরের খোঁজ দেয় এরকম একটি ওয়েবসাইট 'অল্ট নিউজ' গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি খবর খুঁজে পেয়েছে, যেগুলোতে ‘বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপরে আক্রমণ’ হচ্ছে বলে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এইসব ভুয়া টুইট বা ফেসবুক পোস্টগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে ‘সেভ বাংলাদেশি হিন্দুজ’ বা ‘অল আইজ অন বাংলাদেশি হিন্দুজ’ অথবা ‘প্রে ফর বাংলাদেশি হিন্দুজ’।
আরো একটি বাক্য এধরনের ভুয়া পোস্টগুলোতে দেখা গেছে, যার মোটামুটি বাংলা অনুবাদ হলো ‘জিহাদিরা বাংলাদেশের হিন্দুদের কেটে ফেলছে অথচ বিশ্ব একেবারে চুপ করে আছে’।
অল্ট নিউজের সম্পাদক প্রতীক সিনহা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলা হচ্ছে এটাও যেমন ঘটনা, তেমনই এটাও সত্য যে বহু ভুয়া খবর, অসত্য তথ্য সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে মূলত দক্ষিণপন্থী সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। এর মধ্যে অনেক ভুয়া তথ্যই আবার মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে – এটা আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আরো পড়ুন : ইতিবাচক আবহ তৈরির বার্তা নিয়েই বাংলাদেশে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
অল্ট নিউজ যেমন একটি ভুয়া খবর তুলে ধরেছে যেখানে প্রায় দুই মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে একদল টুপি পড়া মানুষ লাঠি আর লোহার রড হাতে একটা চাষের ক্ষেতের ওপর দিয়ে উত্তেজিত ভাবে চলে যাচ্ছেন। পিছনে গুলির শব্দ শোনা গেছে।এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখা হয়েছে, কট্টরপন্থী জনতা বাংলাদেশের শেরপুর জেলার মুর্শিদপুরের একটি গ্রামে হামলা চালিয়েছে। হিন্দুদের বাড়ি, ক্ষেতের ফসল ধ্বংস করে দিয়েছে। একজনকে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি একটি সুফি মাজার ভাঙচুর করে লুঠ করে হয়েছে।
অল্ট নিউজ জানায়, এই টুইটটি তিন লাখ ৬৬ হাজার মানুষ দেখেছেন আর সাড়ে ছয় হাজার রিটুইট করা হয়েছে। অল্ট নিউজ বলছে, কয়েকটি শব্দ দিয়ে সার্চ করেই তারা বার করে ফেলতে পেরেছে যে ভিডিওটি ২৬শে নভেম্বর শেরপুরের মুর্শিদপুরে দরবার শরিফে যে হামলা হয়েছিল, সেই ঘটনার ভিডিও। বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদপত্রে ওই ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ২৭শে নভেম্বর। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরে হামলার কোনো ঘটনাই নয় এটি।
ওই ওয়েবসাইটটি ২৯শে নভেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের একটি ভিডিও কীভাবে হিন্দুত্ববাদী সামাজিক মাধ্যমগুলো ‘হিন্দুদের গণহত্যা’ বলে ছড়িয়ে দিয়েছে। ওই ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে লেখা হয়েছে ‘বাংলাদেশি হিন্দুদের গণহত্যা ভারত এবং সারা বিশ্বের হিন্দুদের চোখ খুলে দিয়েছে। আপনার বাংলাদেশের ভাই বোনেদের পরিত্যাগ করবেন না – তারা হাসিনার পতনের পর থেকেই ইসলামিদের রাগের শিকার হচ্ছেন।’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কয়েকটি ভিডিও একসঙ্গে জুড়ে একটি পোস্ট করেন, যার মধ্যে অল্ট নিউজ দেখতে পেয়েছে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ওই প্রথম ভিডিওটিও। এই টুইটের ডেস্ক্রিপশনে তিনি লিখেছেন, কীভাবে সনাতনী হিন্দুদের ওপরে আক্রমণ হচ্ছে। তিনি অবশ্য ‘জিনোসাইড’ বা গণহত্যা যে এই ঘটনাগুলোকে এখনো বলা যায় না, সেটাও লিখেছিলেন।
অল্ট নিউজ খুঁজে পেয়েছে আসলে ভিডিওটি বাংলাদেশের বিডিনিউজ২৪.কম – এর এবং ঘটনাটি ছিল ২৫শে নভেম্বরের, যেদিন ঢাকার মাতুয়াইলের মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ আর কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্ররা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মোল্লা কলেজের ছাত্র অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। এর সঙ্গে কোনো ‘হিন্দুদের গণহত্যার’ যোগই নেই। তবুও লাখ লাখ মানুষ ওইসব ভিডিওগুলো দেখেছেন, রিটুইট করেছেন – যার ফলে একটা জনমত তৈরি হতে শুরু করে দেয়।
আবার এরকমও ভিডিও দেখা গেছে, যেখানে একটি অগ্নিকাণ্ড দেখানো হয়েছে। বলা হচ্ছে চট্টগ্রামের একটি হিন্দু বসতিতে আগুন দেয়ার কথা। ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রথম কয়েক সেকেন্ড সম্ভবত ‘হিন্দি’তে কথা বলা হচ্ছে এবং তার পরের অংশটিতে খুবই শান্ত স্বরে বর্ণনা দেয়া হচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের। ওই একই ভিডিও অন্তত দুটি ভিন্ন ভয়েস ওভারসহ যে শেয়ার করা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে, তা বিবিসি বাংলা দেখেছে। ভিডিওটি শেয়ার হওয়ার পরে সেটি অন্তত একটি বাংলা টিভি চ্যানেল দীর্ঘক্ষণ ধরে তা দেখিয়েছে।
তথ্য যাচাই না করেই প্রকাশ?
একটি সর্বভারতীয় টিভি নিউজ নেটওয়ার্কের পূর্বাঞ্চলীয় সম্পাদক বিশ্ব মজুমদারও বিষয়টি স্বীকার করলেন। এখানে জানিয়ে দেয়া দরকার, তার অধীনস্থ কোনো চ্যানেল ওপরে উল্লেখিত ‘হিন্দু বসতিতে আগুন’এর ভিডিওটি দেখায়নি। সেটা অন্য একটি চ্যানেলের ঘটনা।
‘নেটওয়ার্ক ১৮’-এর পূর্বাঞ্চলীয় সম্পাদক বিশ্ব মজুমদার বলেন, কোনো তথ্য বা ভিডিও পেলে সেটা যাচাই বাছাইয়ের ব্যাপারটাই এখন উঠে গেছে। আমরা যে সাংবাদিকতার শিক্ষা পেয়েছি, ২৫-৩০ বছর ধরে কাজ করছি, তাদের সঙ্গে এখনকার সাংবাদিকদের কাজের ধরণটাই বদলে গেছে। এরা যে কোনো ঘটনা ঘটলে সেটা যাচাই না করেই অন্য চ্যানেলে দেখতে পেলেই তা চালিয়ে দেয়। ব্রেকিং নিউজের প্রতিযোগিতা চলছে এটা! কে কত আগে সেনসেশন তৈরি করতে পারবে, সেই লড়াই চলছে চ্যানেলগুলোর মধ্যে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে যা সংবাদমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে, তা সত্যিই সাংবাদিকতা নয়, বলেন বিশ্ব মজুমদার।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যত সমীকরণ
বিভিন্ন ভারতীয় টিভি চ্যানেলে উঁচু গলায়, চিৎকার করে কথা বলে বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো পরিবেশন করা হচ্ছে, যেন একটা যুদ্ধ বেঁধেছে বাংলাদেশের সঙ্গে! সেই ‘যুদ্ধে’ একদিকে বাংলাদেশের হিন্দুরা, অন্যদিকে মুসলমানরা – এমনভাবেই পরিবেশন করা হচ্ছে খবর।
অল্ট নিউজের সম্পাদক প্রতীক সিনহা বলেন, ভুয়া তথ্য পরিবেশন যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে হচ্ছে তা নয়। ভারতের বাইরের নানা ঘটনায় – যেমন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও এরকম ভুয়া তথ্য পরিবেশনের ঘটনা আমরা দেখেছি।
বিশ্ব মজুমদারের কথায়, বাংলাদেশের ঘটনাবলীর ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা হচ্ছে তা হলো সেখানে যে কী ঘটছে তার বাস্তব চিত্র আমরা খুব একটা পাচ্ছি না। এর কারণ হলো আমরা যারা কলকাতা থেকে চ্যানেল চালাই, তাদের কারোরই বাংলাদেশে কোনো প্রতিনিধি নেই এই মুহূর্তে। যেটুকু যা পাওয়া যাচ্ছে তার একটা বড় অংশ আসছে সামাজিক মাধ্যম থেকে। এর ভিত্তিতে এটা বলা যায় না যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ বা খুব ভালো।
তিনি বলেন, এখন সামাজিক মাধ্যম থেকে পাওয়া খবরের ওপরে ভিত্তি করে কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা সেটা বিচার বিবেচনা করার ক্ষমতা খুব কম সাংবাদিকেরই আছে। যে কোনো দায়িত্বশীল সংবাদ মাধ্যমেরই এটা কর্তব্য যে কোন খবরটা সঠিক, কোনটা ভুয়া সেটা বিচার বিবেচনা করে তারপরে প্রকাশ করা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা ঘটনা কিছু সংবাদমাধ্যম, যাদের কোনো একটা অ্যাজেন্ডা আছে, তারাই এই দায়িত্বটা পালন করছে না কোনো কোনো ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশ নিয়ে আখ্যান বদল কেন?
একটা সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আর ভারতে ‘সুসম্পর্ক’ নিয়ে অনেক খবর প্রকাশিত হত। কিন্তু পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে মূল ধারার গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে একটা সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করেছে। তারা বারবার প্রশ্ন তুলছে বাংলাদেশের সরকারের পরিচালনা নিয়ে, কারা এই সরকার ‘আসলে’ পরিচালনা করছে, তা নিয়ে।
পুণের এমআইটি এডিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সম্বিত পাল বলেন, ভারতের মিডিয়ায় এর আগে যেভাবে ভারত-বন্ধু শেখ হাসিনার প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন দেখিয়েছে, ঠিক সেই পথেই অধিকাংশ মিডিয়া হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। কারণ, তারা মনে করছে বাংলাদেশের এই সরকার ভারতের বর্তমান শাসকদলের বিরোধী।
তার কথায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে ভারতের মিডিয়া এতটা উচ্চগ্রামে খবর করেনি। কারণ তখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি মোদি ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ভারতীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তারা ওই অবস্থান নিয়েছিল। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতের সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা বদলিয়েছে।
ভারতের হিন্দু ভোট আসল লক্ষ্য?
বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির পরে গত দেড় সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় যত বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে, সেখানে হিন্দুত্ববাদী নেতা-নেত্রীদের মুখে একটা কথা বারে বারে শোনা গেছে যে হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হন তাহলে ভারতেও একই পরিস্থিতি হবে। হিন্দুরা যেমন বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছেন, ভারতেও তেমনটা হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বলে একটা আখ্যান তৈরি করার চেষ্টা করছেন হিন্দুত্ববাদী নেতা-নেত্রীরা।
একটা সময়ে পাকিস্তানকে ব্যবহার করা হত ভারতের অভ্যন্তরে মুসলমান-বিরোধী আখ্যান তৈরি করার জন্য। কিন্তু এখন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে বাংলাদেশকে। সেই আখ্যানের একদিকে মুসলমানরা – তারা যে দেশেরই হোন, অন্যদিকে থাকছেন হিন্দুরা। বলার চেষ্টা করা হচ্ছে যে ‘হিন্দু খতরে মে হ্যায়’, অর্থাৎ হিন্দুরা বিপদে আছেন।
অল্ট নিউজের সম্পাদক প্রতীক সিনহা বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগের প্রতিবাদ আন্দোলন অথবা ইসরায়েল বা এখন বাংলাদেশ – সব ক্ষেত্রেই ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে আসলে ঘুরপথে ভারতীয় মুসলমানদেরই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। এখানকার মুসলমানদের ওপরে বিদ্বেষ ছড়ানো যাতে যুক্তিযুক্ত হিসাবে দেখানো যায় – সেই আখ্যান তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।
অধ্যাপক সম্বিত পাল বলেন, এক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বিভাজনে যাদের লাভ হবে, তারাই এই ভুয়ো খবর ছড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিভাজনের জন্য এর থেকে ভালো বিষয় আর হতে পারে না। ঠিক যেভাবে ভারতে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুদের মধ্যে টেনশনকে নিজেদের পক্ষে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়, ঠিক সে ভাবে বাংলাদেশের ঘটনা নিয়েও তাই হচ্ছে।
তার ব্যাখ্যা, বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তার থেকে অনেক বেশি মাত্রায় ভারতের নির্বাচনী স্বার্থ এখানে কাজ করছে।