বাংলাদেশের বিষয়ে নাক গলানো অনুচিত ভারতের: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ নাক গলানো উচিত হয়নি ভারতের, বিতর্কের মধ্যেই এমন দাবি করেছেন সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম। সিএনএন-নিউজ ১৮-কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন। কারো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ হবে না, আশ্বস্ত করেছেন শফিকুল। ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মামলা হয়েছিল বাংলাদেশের হাইকোর্টে। সেই আবেদন অবশ্য খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওই মামলাতেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ তকমা দিয়েছিল। সাক্ষাৎকারে শফিকুল বলেছেন, ‘মামলায় কী হয়েছে আমি জানি না। কিন্তু বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ হবে না। সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে নিরাপদে রয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চলছে। আমি বিদেশের সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, তারা যেন বাংলাদেশে এসে পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখে যান। এটা সত্যি যে, বাংলাদেশের কিছু অংশে কয়েক দিন ধরে অশান্তি চলেছে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণে।’
আরো পড়ুন: কলকাতায় পতাকা পোড়ানোতে তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের, চিন্ময়ের আইনি অধিকার চায় ভারত

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির পর থেকে অশান্তি শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম, রংপুরের মতো এলাকায় সংখ্যালঘুরা চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছেন। বিক্ষোভ, সংঘর্ষ চলছে বিভিন্ন প্রান্তে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশের পরিস্থিতি, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এবং চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে বিবৃতি জারি করেছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের ওই বিবৃতি দেয়া উচিত হয়নি, মনে করছেন শফিকুল। তার কথায়, ‘‘এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারের এই বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়া উচিত হয়নি। ভারতে কোথায় কী হচ্ছে, আমরা তা নিয়ে কখনও কথা বলতে যাই না।’’
শফিকুল বলেছেন, চট্টগ্রাম এলাকায় গিয়েছিলেন ইউনূস স্বয়ং। সেখানে তিনি সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কথা বলেছেন, মন্দিরগুলি ঘুরে দেখেছেন, সাধারণ মানুষের সমস্যার খোঁজখবর করেছেন। চট্টগ্রামে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আটক চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন খারিজ করে দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত। ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণ যাতে বাংলাদেশের আদালতে সঠিক এবং নিরপেক্ষ বিচার পান, বাংলাদেশ সরকার তা নিশ্চিত করবে বলে নয়াদিল্লির আশা। ভারতের এই অবস্থানের পাল্টা দিয়েছে ঢাকাও। ভারতের বিবৃতিকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে উল্লেখ করেছেন ইউনূসের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।