ভারত-বাংলাদেশ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডিসেম্বরে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নয়াদিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। ছবি : সংগৃহীত
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত রাজনৈতিক সম্পর্ক এক অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে।
এই অচলাবস্থা নিরসনের উদ্দেশে সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ডিসেম্বরে এই বৈঠক হতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটি হবে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সরকারি বৈঠক। বৈঠকে অংশ নেবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈঠকের জন্য প্রয়োজনীয় এজেন্ডা প্রস্তুত করছে এবং এ বিষয়ে বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রস্তুতিমূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বৈঠকে বিদ্যমান চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং আগের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সফরটি হতে পারে। এখন সফরের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে দুই পক্ষে কথা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার ঘটনায়।
আরো পড়ুন : রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার না চাইলে এখনই নির্বাচন দেব: ড. ইউনূস
সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসা ইস্যু সীমিত করেছে। এছাড়া, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতাধীন অনেক প্রকল্প বন্ধ রয়েছে, কারণ ভারতীয় ঠিকাদাররা নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশে ফিরে আসেননি।
১৭ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে ঢাকা নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে।
এদিকে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নয়াদিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা উল্লেখ করেছেন, ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক নয়।
দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং ভারতের হরিয়ানাভিত্তিক ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে যত দ্রুত সম্ভব উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়া উচিত।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক সম্ভব হয়নি।